প্রতীকী ছবি।
উচ্চশিক্ষার নিয়ন্ত্রক তো বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি। তা ছাড়া রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার। তা হলে সিমেস্টার এগোনো, পরীক্ষা নেওয়া বা না-নেওয়ার বিষয়ে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে কি, প্রশ্ন তুলছে শিক্ষা শিবিরের একাংশ।
করোনা-আবহে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে চূড়ান্ত সিমেস্টার বাদে অন্য সিমেস্টারের পড়ুয়ারা এক ধাপ এগিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সিমেস্টারের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী এ ভাবে কোনও নির্দেশ দিতে পারেন না বলে শিক্ষা শিবিরের বড় অংশের অভিমত। তাদের বক্তব্য, এমন নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার নষ্ট হচ্ছে।
এই বিতর্কের মধ্যেই বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের প্রশ্ন, দু’টি সিমেস্টারের পরীক্ষা কি একসঙ্গেই হবে? বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের মতে, একসঙ্গে দু’টি সিমেস্টারের পরীক্ষা নেওয়া আদৌ বাস্তবসম্মত নয়। শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতি মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে জানায়, দু’টি সিমেস্টারের পরীক্ষা একসঙ্গে হলে পড়ুয়াদের উপরে চাপ পড়বে। সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস সরকার জানান, অনেকেই আগের সিমেস্টারের বিভিন্ন পত্রে অকৃতকার্য হন। পরের সিমেস্টারে সেই পত্রেরও পরীক্ষা দেন। এ বার দু’টি সিমেস্টারের সঙ্গে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা দিতে গেলে পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়বেন। চলতি সিমেস্টারগুলির ক্লাস ও পরীক্ষা নিয়ে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে ফল প্রকাশ করা সম্ভব বলে ওই সমিতি মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: হাওড়া-কলকাতার বেশ কয়েকটা অঞ্চল নিয়েই সবচেয়ে বেশি চিন্তা: মমতা
সমিতির বক্তব্য, ইউজিসি-র নির্দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পঠনপাঠন ও পরীক্ষাসূচি তৈরি করা দরকার। এই বিষয়ে ইউজিসি-র বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট শীঘ্রই প্রকাশ করার কথা। সমিতির বক্তব্য, সব সর্বভারতীয় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কথা ভেবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নির্দেশ দেয় ইউজিসি। ছাত্রস্বার্থেই তা মেনে চলা দরকার। উচ্চ মাধ্যমিকের ফল পরে প্রকাশিত হবে। সময় বাঁচাতে কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তির ব্যবস্থা হোক।
আরও পড়ুন: আটকে পড়া শ্রমিকদের ‘স্নেহের পরশ’
দু’টি সিমেস্টারের পরীক্ষা একসঙ্গে হলে সিবিসিএস পদ্ধতির উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে বলে মনে করেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন, পরীক্ষা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যদি সিদ্ধান্ত নেন, সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার ভঙ্গের শামিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করে, ইউজিসি-র কমিটির রিপোর্ট মেনে এগোনো হোক।’’ এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য জানান, পড়ুয়াদের এক সিমেস্টার এগোনোর বিষয়ে সরকারি ঘোষণার সঙ্গে তাঁরা একমত নন। সব ছাত্র সংগঠন এবং সংশ্লিষ্টদের মত নিয়ে, ইউজিসি-র সঙ্গে কথা বলে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)