প্রতীকী ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এ বার রাজ্যের বিভিন্ন আদিবাসী শিল্পীগোষ্ঠীর পরম্পরাগত নৃত্য, সঙ্গীত ও বাদ্যযন্ত্র বাদনের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান হচ্ছে ঝাড়গ্রামে। এতদিন রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতা হত কলকাতায়। এই প্রথমবার সেই প্রতিযোগিতা হচ্ছে ঝাড়গ্রামে। আগামী ১২ থেকে ১৪ ডিসেম্বর ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে ওই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান হবে। অনুষ্ঠানের আয়োজক আদিবাসী উন্নয়ন বিভাগের অধীনস্থ ‘পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী উন্নয়ন সমবায় নিগম’ (টিডিসিসি)।
টিডিসিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় রাজ্যের ২২টি বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের ১৩২টি শিল্পীগোষ্ঠী যোগ দেবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সাঁওতাল, শবর, খেড়িয়া, মুন্ডা, ভূমিজ, মাহালি, ওঁরাও, মেচ, রাভা, শেরপা-র মতো রাজ্যের সমস্ত আদিবাসী সম্প্রদায়ের শিল্পীদের এই প্রতিযোগিতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।
এমনকী যে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জনসংখ্যা হাতেগোনা তাঁদের শিল্পীগোষ্ঠীও যোগ দিচ্ছে প্রতিযোগিতায়। জানা গিয়েছে, দার্জিলিংয়ের সমতল এলাকা শিলিগুড়ি মহকুমার ‘গরাইত’ আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা খুবই কম। তাঁরাও আসছেন প্রতিযোগিতায়। টিডিসিসি-র চেয়ারম্যান দুলাল মুর্মু জানান, অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে আদিবাসীদের সরকারি পরিষেবা দেওয়া হবে।
সূত্রের খবর, জঙ্গলমহলে আদিবাসীদের সার্বিক উন্নয়নে জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের আদিবাসী সংস্কৃতিকে ঝাড়গ্রামে এক ছাদের তলায় নিয়ে আসা হচ্ছে। আদিবাসী উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরও বেশি সহনশীল ও মানবিকভাবে কাজ করার জন্য প্রশাসন ও শাসকদলের জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
টিডিসিসি-র (পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী উন্নয়ন সমবায় নিগম) মাধ্যমে আদিবাসীদের উন্নয়নে নানা ধরনের কাজ হয়। টিডিসিসি-এর নিয়ন্ত্রাধীন ল্যাম্পস্-এর মাধ্যমে আদিবাসীদের কাছ থেকে কেন্দুপাতার মতো বনজ সম্পদ কিনে নিয়ে বিপণন করা হয়। উদ্দেশ্য আদিবাসীরা যাতে উপযুক্ত দাম পান। পাশাপাশি, ল্যাম্পস্-এর মাধ্যমে আদিবাসী স্বসহায়ক দলগুলিকে প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বনির্ভর হতে সাহায্য করা হয়।
প্রতিটি ল্যাম্পস্ স্তরে আদিবাসী শিল্পীগোষ্ঠীর পরম্পরাগত নৃত্য সঙ্গীত ও বাদ্যযন্ত্র বাদনের প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানগুলি হয়। এরপর হয় জেলাস্তরের অনুষ্ঠান। রাজ্যের ৯টি জেলার ১৫৪ টি ল্যাম্পস্ স্তরের প্রতিযোগিতা হয়ে গিয়েছে। জেলাস্তরের প্রতিযোগিতাগুলিও হয়ে গিয়েছে। এ বার রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতাটি হবে ঝাড়গ্রামে।
টিডিসিসি-র চেয়ারম্যান দুলাল মুর্মু বলেন, “এতদিন রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতা হত কলকাতায়। এ বার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ঝাড়গ্রামে তিন দিনের প্রতিযোগিতা হচ্ছে। সমস্ত আদিবাসী সম্প্রদায়ের পরম্পরাগত নাচ, গান ও বাদ্যযন্ত্রের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা এক কথায় সাংস্কৃতিক মিলন মেলা হয়ে উঠতে চলেছে।” টিডিসিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে আদিবাসী বইয়ের স্টল থাকছে। এ ছাড়া সাঁওতালি-সহ বিভিন্ন আদিবাসী ভাষায় সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রচার-পুস্তিকাও থাকবে। আদিবাসী উন্নয়ন কাজের ঢালাও সরকারি প্রচারও থাকবে অনুষ্ঠান চত্বরে।