ফাইল চিত্র।
নীতি আয়োগের রিপোর্ট মানতে নারাজ পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
চলতি আর্থিক বছর থেকে নতুন ধাঁচে যে তিন-বছরি পরিকল্পনা তৈরি করছে নীতি আয়োগ, তার সূত্র ধরে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তারা। তাতে দেখা যাচ্ছে, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, গ্রামীণ পরিকাঠামো-সহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে প্রথম সারির রাজ্যগুলির তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এই পর্যবেক্ষণের সঙ্গে একেবারেই সহমত নয় নবান্ন।
রাজ্য সরকারের মতে, কেরলের মতো ঐতিহাসিক ভাবে এগিয়ে থাকা রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের তুলনা করলে ভুল ছবি পাওয়া যায়। তুলনা করতে হবে জাতীয় গড়ের সঙ্গে। এবং জাতীয় গড়ের থেকে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা ভাল।
পরিসংখ্যান দিয়ে নবান্ন বলছে, ২০১৫-এর নমুনা সমীক্ষা অনুযায়ী (স্যাম্পল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম) পশ্চিমবঙ্গের নবজাতকের মৃত্যুর হার (প্রতি হাজার জন্মে) যেখানে ২৬, সারা দেশের গড় সেখানে ৩৭। গুজরাত, কর্নাটকের মতো এগিয়ে থাকা রাজ্যের গড়ও যথাক্রমে ৩৩ এবং ২৮।
আরও পড়ুন: কে কী খাবে তোমরা বলার কে? ‘গোমাংস’ বিতর্কে কাজলের পাশে মমতা
একই কথা বলা যায় প্রসবকালীন মৃত্যুর হার নিয়েও। প্রতি লক্ষ জন্মে রাজ্যে প্রসবকালীন মৃত্যুর হার যেখানে ১১৩, সেখানে জাতীয় গড় ১৬৭। এখানেও কর্নাটক (১৩৩) পশ্চিমবঙ্গের থেকে পিছিয়ে।
রাজ্যের দেওয়া তথ্য বলছে, স্বাস্থ্যের কয়েকটি ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপুঞ্জের স্থির করা ‘মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল’-ও (এমডিজি) ছুঁয়ে ফেলেছে পশ্চিমবঙ্গ। যেমন, রাজ্যে নবজাতকের মৃত্যুর হার এর মধ্যেই এমডিজি-তে প্রস্তাবিত হারের থেকে কম। আর প্রসবকালীন মৃত্যুর হার এমডিজি-তে প্রস্তাবিত হারের (১০৯) থেকে সামান্য বেশি। তবে এটি ২০১১-’১৩ সালের তথ্য। নতুন তথ্য এলে এ ক্ষেত্রেও এমডিজি-কে ছুঁয়ে ফেলা যাবে বলে সরকারের আশা।
নবান্নের দাবি, এই উন্নতি, বিশেষ করে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সুফল মিলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে উন্নয়নের কাজে জোর দেওয়ায়। ২০১১-’১২ অর্থবর্ষে পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যেখানে ৮৭২ কোটি টাকা খরচ করত, ২০১৭-’১৮ অর্থবর্ষে সেখানে খরচ করবে ৩২৯৯ কোটি টাকা। পাঁচ বছরে বরাদ্দ বেড়েছে প্রায় ২৮০ শতাংশ। যার একটি অংশ গর্ভবতী নারী ও শিশুর স্বাস্থ্যে ব্যয় হয়েছে। মা ও সদ্যোজাতের জন্য ছ’টি হাব, ৬৫টি এসএনসিইউ, ৩০৭টি এসএনএসইউ ইউনিট, আসন্নপ্রসবা মহিলাদের থাকার ব্যবস্থার মতো একগুচ্ছ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ২০১১ সালের আগে এর প্রায় কিছুই ছিল না।