প্রতীকী ছবি।
হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গি সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা কেমন চলছে তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে ডেঙ্গি পর্যবেক্ষক দল গড়ল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। বিভিন্ন হাসপাতালে হানা দিয়ে ডেঙ্গির চিকিৎসা পদ্ধতি খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, পরিদর্শন চলাকালীন চিকিৎসা পদ্ধতিতে গাফিলতির অভিযোগে একটি সরকারি ও একটি বেসরকারি হাসপাতালকে শো-কজ করা হয়েছে। ডেঙ্গির চিকিৎসা পদ্ধতি মেনে কাজ হলে প্রশংসাও করা হচ্ছে।
সম্প্রতি গত তিন বছরে সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গির কারণে মৃত্যুর ঘটনা তা পর্যালোচনা করার জন্য বেলেঘাটা আইডি-সহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যভবনের শীর্ষ কর্তারা। ঠিক কী কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছিল সেটি জানাই ছিল পর্যালোচনার উদ্দেশ্য। রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য দফতরের একটি ‘ডেঙ্গি ম্যানেজমেন্ট প্রোটোকল’ রয়েছে। সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা এ বিষয়ে কতখানি অবহিত তা ওই বৈঠকে আলোচনা হয়। ঘটনাচক্রে, হাসপাতালগুলিতে ‘ডেঙ্গি ম্যানেজমেন্ট প্রোটোকল’ মেনে চিকিৎসা হচ্ছে কি না, পরিদর্শনের পর পর্যবেক্ষক দলকে এ নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, প্রতিটি পর্যবেক্ষক দলে দু’জন চিকিৎসক এবং দু’জন নার্স রয়েছেন। চিকিৎসকদের মধ্যে এক জন মেডিসিন এবং অন্য জন ফ্যামিলি বা কমিউনিটি মেডিসিনের চিকিৎসক। গত কয়েক বছরে ডেঙ্গির প্রকোপের নিরিখে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং নদিয়াকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই ছ’টি জেলার জন্য স্বাস্থ্যভবনের সরাসরি তত্ত্বাবধানে চার সদস্যের মোট দশটি দল গড়া হয়েছে। পাশাপাশি, পশ্চিম মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, মালদহের মতো জেলাগুলিতে পরিদর্শনের কাজে নিযুক্ত থাকবে স্বাস্থ্যভবনের দু’টি পর্যবেক্ষক দল। অন্য জেলাগুলির ক্ষেত্রে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের স্বাস্থ্যভবনের ধাঁচে পর্যবেক্ষক দল গড়তে বলা হয়েছে। গত বছর বিভিন্ন জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে পর্যবেক্ষক দলের কাজ ভাগ করা হয়েছে। কোন দিন কোথায় পরিদর্শন হবে, সেই তথ্য পেয়ে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে পৌঁছচ্ছেন পর্যবেক্ষকেরা।
স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, আগামী পাঁচ মাস সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালেও এ ধরনের পরিদর্শন হবে। পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্য দফতরে রিপোর্ট দিচ্ছেন পর্যবেক্ষক দলের সদস্যেরা। কোথাও খামতি ধরা পড়লে বিজ্ঞপ্তি আকারে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। তার পরেও অবস্থার বদল না-হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্বাস্থ্যসচিব রাজীব সিংহ বলেন, ‘‘ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব কমাতে বৈঠক, প্রশিক্ষণ যথেষ্ট নয়। প্রতিনিয়ত নজরদারি চালানো জরুরি। চিকিৎসা পদ্ধতিতে ত্রুটির কারণে ডেঙ্গি আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির মৃত্যু যাতে না-হয় তা নিশ্চিত করতে চাইছি।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।