ভাসছে আমহার্স্ট স্ট্রিট। শুক্রবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী
সেটা ছিল ১৯ জুলাই। ১৯০৫ সালের ওই দিনে বঙ্গভঙ্গ ঘোষণা করেছিলেন লর্ড কার্জন। আর আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ১৯০৫-এর ২৮ জুলাই কলকাতায় এক দিনে ১৮৩.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। সেটাই গত প্রায় দেড় শতকের রেকর্ড।
কাকতালীয় ভাবে করোনাকালের এই জুলাইয়ে গাঙ্গেয় বঙ্গে জোরালো বর্ষণ চলছে ২৮ জুলাই থেকেই। এবং আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তথ্য বলছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কলকাতা, দমদম ও ব্যারাকপুরে বৃষ্টি হয়েছে ১৫০ মিলিমিটার করে। ২০১১ থেকে ২০২১, এক দশকে জুলাইয়ে ২৪ ঘণ্টায় এমন বৃষ্টি দেখেনি মহানগরী। ২০১৫ সালের ১০ জুলাই কলকাতায় এক দিনে ১৪৩.৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। অর্থাৎ বঙ্গভঙ্গের বছরের ২৮ জুলাই অতিবর্ষণের সর্বকালীন রেকর্ড অক্ষত থাকলেও এ বারের বৃষ্টি দশকসেরা। আজ, শনিবারেও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে দার্জিলিং ও কালিম্পঙে।
চলতি মাসের গোড়ায় গাঙ্গেয় বঙ্গে বর্ষা কার্যত ঝিমিয়ে ছিল। কিন্তু শেষ লগ্নে নিম্নচাপের হানায় ভেসে গেল দক্ষিণবঙ্গ। জোরালো বৃষ্টিতে এক দশকের রেকর্ড ভেঙেছে কলকাতায়। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, বিভিন্ন জেলাতেও প্রবল বৃষ্টি হয়েছে।
কলকাতা যখন লন্ডন। শহরের জলভাসি অবস্থা দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় লন্ডনের জলমগ্ন উরস্টার পার্কের ছবি দিয়ে চলছে রসিকতা।
সব থেকে বেশি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে পাঁশকুড়ায়। সেখানে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এ দিন সকাল পর্যন্ত ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। হাওড়ার উলুবেড়িয়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারে বৃষ্টির পরিমাণ ২২০ মিলিমিটার। বাঁকুড়া ও বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গায় ১৭০-১৮০ মিলিমিটার বৃষ্টি নথিভুক্ত হয়েছে।
আবহাওয়ার উন্নতি হতে শুরু করেছে শুক্রবার থেকেই। দিনভর আকাশ মেঘলা থাকলেও এ দিন কলকাতা ও লাগোয়া বঙ্গে জোরালো বৃষ্টি হয়নি। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, নিম্নচাপটি স্থলভূমিতে ঢুকে পশ্চিম দিকে সরে গিয়েছে। এ দিন তার অবস্থান ছিল ঝাড়খণ্ড এবং লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গের উপরে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, নিম্নচাপটি দু’তিন দিনের মধ্যে বিহার হয়ে উত্তরপ্রদেশে পৌঁছে যেতে পারে। বৃষ্টি থামলেও বহু জায়গা এ দিনও জলমগ্ন ছিল। কলকাতা-সহ বিভিন্ন শহরাঞ্চলের আন্ডারপাসে জল জমে থাকায় যান চলাচলে অসুবিধা হয়েছে।