ফাইল চিত্র।
না নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের অভিমত। জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটিতে না ঠাঁই পেয়েছেন বাংলার কোনও শিক্ষাবিদ। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পাশ হওয়া শিক্ষানীতির ছত্রে ছত্রে আপত্তির কারণ দেখছে শিক্ষা শিবির ও রাজ্য। সেই সব আপত্তির জায়গা চিহ্নিত করতে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করেছে রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সোমবার জানান, কমিটি আপত্তির ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করে দেওয়ার পরে সেই রিপোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হবে।
পার্থবাবু জানান, রাজ্যের ওই কমিটিতে থাকছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী, প্রাক্তন অধ্যাপক তথা সাংসদ সৌগত রায়, শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার, নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী এবং রাজ্য পাঠ্যক্রম কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার। কমিটি আপত্তির জায়গাগুলি চিহ্নিত করে ১৫ অগস্টের মধ্যে রিপোর্ট দেবে। তার পরে সেটি কেন্দ্রে পাঠানো হবে।
একই সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী জানান, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির বিষয়ে শিক্ষক সংগঠন, গণসংগঠন বা শিক্ষাবিদদের যদি কোনও বক্তব্য থাকে, তা ই-মেল করে শিক্ষা দফতরে পাঠাতে বলা হচ্ছে। ১৫ অগস্ট পর্যন্ত মতামত নেওয়া হবে। পার্থবাবুর বক্তব্য, শিক্ষা যৌথ তালিকার অন্তর্ভুক্ত বিষয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সকলের মতামত নিয়ে শিক্ষানীতি তৈরির কথা বলা সত্ত্বেও রাজ্যের কোনও মতামতই নেওয়া হয়নি। রাজ্যের পক্ষ থেকে লিখিত ভাবে বক্তব্য জানানো হয়েছিল, কিন্তু তা গ্রাহ্য করা হয়নি। এমনকি বাংলার কোনও শিক্ষাবিদকে শিক্ষানীতি তৈরির কমিটিতে রাখা হয়নি। ‘‘বলা হচ্ছে, মাধ্যমিক তুলে দেওয়া হবে। এ তো তুঘলকি কাণ্ড! সব কিছুর সুষ্ঠু সমাধান চাই,’’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
জাতীয় শিক্ষানীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে শিক্ষাজগতের সর্বস্তরে আপত্তি উঠেছে। এ দিন তার সবিস্তার ব্যাখ্যায় না-গিয়েও পার্থবাবু জানান, নতুন শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যেই নাকি সকলকে শিক্ষার আঙিনায় আনা হবে। কিন্তু তার জন্য তো পরিকাঠামো প্রয়োজন। ৭০ বছরে যা হয়নি, তা এত তাড়াতাড়ি হবে কী ভাবে? ‘‘এর জন্য টাকা দেবে কে? সংসদে পাশ না-করে কী ভাবে এই নীতি ঘোষিত হল,’’ প্রশ্ন শিক্ষামন্ত্রীর। অন্য দিকে, জাতীয় শিক্ষানীতি বাতিলের দাবি তুলেছে রাজ্যের এডুকেশনিস্ট ফোরাম। বেশ কিছু প্রাক্তন উপাচার্য-সহ অনেক শিক্ষাবিদই রয়েছেন ওই ফোরামে।