প্রতীকী ছবি।
জেলার সমস্ত সদর দফতরে যে সরকারি হাসপাতালগুলি রয়েছে, সেখানে এ বার কোভিড রোগী রাখার মতো পরিকাঠামো তৈরিতে নেমেছে রাজ্য সরকার।
রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম মঙ্গলবার বলেন, “কিছু জায়গায় ইতিমধ্যেই পরিকাঠামো তৈরি হয়ে গিয়েছে। বাকি জায়গাগুলির কাজ চলছে।” রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের মতে, কবে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে তা কেউ জানে না। একে সঙ্গে করেই আগামী কয়েক বছর বাঁচতে হবে। তাই, এখন থেকেই পরিকাঠামো তৈরি করে রাখা হচ্ছে।
কলকাতা ও জেলায় কোভিড চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের বেশ কিছু করে শয্যা এতদিন সরকার নিজেদের অধীনে রেখে দিয়েছিল। গত কয়েক মাস ধরে কোভিড আক্রান্ত যে পরিবারই রাজ্য সরকারের সাহায্য চেয়েছে, তারা বিনা পয়সায় বেসরকারি হাসপাতালে সরকারের অধীনে থাকা ওই শয্যায় থেকে চিকিৎসা পেয়েছে। এ বার আস্তে আস্তে সেই সব বেসরকারি হাসপাতালের শয্যাগুলি সরকার ছেড়ে দিতে চাইছে। তার বদলে জেলার সদর দফতরে তৈরি হচ্ছে পরিকাঠামো।
কর্তাদের মতে, জেলার সরকারি হাসপাতালে যদি আলাদা কোভিড ওয়ার্ড করা যায়, তা হলে জেলার মানুষেরা সেখানেই চিকিৎসা পাবেন। তাঁদের আর কলকাতায় আসতে হবে না। এর জন্য জেলার হাসপাতালে অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর সহ অন্য সুবিধা রাখার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কোভিড ওয়ার্ডের নিয়ম মেনে দুটি শয্যার মধ্যবর্তী দূরত্ব বজায় রেখে বেশ কিছু সংখ্যক শয্যা সেখানে বানানো হচ্ছে। তবে, অন্য রোগ থাকা আশঙ্কাজনক রোগীদের কলকাতাতেই পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কথায়, আসানসোলে যেমন হাসপাতাল লাগোয়া পরিত্যক্ত বাড়িতে কোভিড ওয়ার্ড তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। আবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের একটি অংশ নিয়ে এই ওয়ার্ড হয়েছে। এক কর্তার কথায়, “কোভিড চিকিৎসার পাশাপাশি সাধারণ রোগের চিকিৎসাও আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। ফলে সেটা মাথায় রেখেই এই পরিকাঠামো বানানো হচ্ছে। আইসিইউ-এর ন্যুনতম সুবিধা যাতে মানুষ পান, সেই চেষ্টাও চলছে।” পাশাপাশি কলকাতা শহরে যে হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসা হচ্ছে, সেখানেও পরিকাঠামো বাড়ানো হচ্ছে। উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছে, কলকাতার আইডি হাসপাতালে গত কয়েক মাসের মধ্যে ১০০টি আইসিসিইউ শয্যা তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে ৩০০ শয্যার হাসপাতালে উন্নীত করা হয়েছে তাকে। গত ১০ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য দফতর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে্ জানিয়ে দেয় যে রাজ্যে কোভিড আক্রান্তদের সংখ্যা কমছে। হাসপাতালে ভর্তির মতো ঘটনাও পাল্লা দিয়ে কম। এই অবস্থায় রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বেসরকারি হাসপাতালের যে শয্যাগুলো সরকার নিজেদের অধীনে নিয়ে রেখেছিল, সেগুলো আস্তে আস্তে ছেড়ে দেওয়া হবে। এই তালিকায় দার্জিলিং-এর ডিসান হাসপাতাল যেমন ছিল, তেমনই হুগলির শ্রমজীবী হাসপাতাল, উত্তর ২৪ পরগনার চার্ণক হাসপাতাল এবং কলকাতার কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল রয়েছে। তবে, এই সব হাসপাতালের কাছ থেকে নেওয়া সমস্ত শয্যা এখনই ফেরানো হচ্ছে না। কিছু শয্যা এখনও হাতে রাখতে চাইছে সরকার।