ফাইল চিত্র।
কিছু দিন আগে ক্যাডার আইন সংশোধন করতে চেয়ে রাজ্যে চিঠি পাঠিয়েছিল কেন্দ্র। এ বার বেশি সংখ্যায় আইএএস-আইপিএস অফিসার পেতে ক্যাডার রিভিউ বা ক্যাডার সমীক্ষার দাবি তুলল রাজ্য সরকার। সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এই বিষয়ে কেন্দ্রের কাছে চিঠি লিখবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। রাজ্য সরকারের যুক্তি, বাংলায় জেলার সংখ্যা আগের থেকে অনেকটাই বেড়েছে। আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তত দিন রাজ্য ক্যাডারের (ডব্লিউবিসিএস, ডব্লিউবিপিএস) অফিসারদের কী ভাবে ব্যবহার করা হবে, তা নিয়ে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটিও গড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর গড়া কমিটিতে মুখ্যসচিব ছাড়াও আছেন স্বরাষ্ট্রসচিব, অর্থসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং ডব্লিউবিসিএস অফিসারদের প্রতিনিধি। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন, তবে কি রাজ্য ক্যাডারের অফিসারদের উপরে বাড়তি ‘ভরসা’ করতে চাইছে সরকার? এ দিন মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পর্যাপ্ত সংখ্যায় আইএএস এবং আইপিএস অফিসার পাওয়া যাচ্ছে না। এই অবস্থায় ক্যাডার রিভিউ করা দরকার। আনুপাতিক হারে অফিসারের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করবেন মুখ্যসচিব।”
স্থির হয়েছে, মুখ্যসচিব কেন্দ্রের কাছে ক্যাডার রিভিউয়ের দাবি জানাবেন। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের বক্তব্য, এতে কত জন আইএএস-আইপিএস অফিসারের প্রয়োজন, তা জানাতে পারবে রাজ্য। সাধারণত, পাঁচ বছর অন্তর ক্যাডার রিভিউ হয়ে থাকে। সেই দিক থেকে এখন সেই প্রক্রিয়ার উপযুক্ত সময় বলে মনে করা হচ্ছে।
ক্যাডার আইন সংশোধন করতে চেয়ে কেন্দ্র কিছু দিন আগে রাজ্যকে যে-চিঠি লিখেছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, আইনে প্রস্তাবিত পরিবর্তনের ফলে কেন্দ্র কোনও অফিসারকে ডেপুটেশনে পেতে চাইলে রাজ্য সরকার তাঁকে ছাড়তে কার্যত বাধ্য থাকবে। এর প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজ্য সরকার। তাদের যুক্তি, রাজ্যে এমনিতেই সর্বভারতীয় অফিসারের সংখ্যা কম। তার উপরে এ ভাবে ক্যাডার আইনের প্রয়োগ হলে রাজ্যকে সমস্যার মুখে পড়তে হবে। যদিও অনেকে এটাও জানাচ্ছেন যে, কেন্দ্র ও রাজ্যের সম্মতিতে স্থির হওয়া অফিসার আদানপ্রদানের সূত্র অনুযায়ী রাজ্যের তরফে যত জন অফিসারকে ডেপুটেশনে পাঠানোর কথা ছিল, তত জনকে ছাড়া হয়নি। সেই ক্ষেত্রেও অবশ্য অফিসার-ঘাটতির তত্ত্ব তুলে ধরেছিল রাজ্য সরকার।
অনেক প্রবীণ আধিকারিকই জানাচ্ছেন, রাজ্যে জেলা এখন ২৩টি। জেলার সংখ্যা বৃদ্ধির কারণেই কয়েক বছর ধরে আইএএস ব্যাচে তুলনায় বেশি অফিসার পাচ্ছে বাংলা। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজ্যে আরও কয়েকটি নতুন জেলা তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। সেই তালিকায় দুই ২৪ পরগনা এবং মুর্শিদাবাদ জেলা ভাঙার কথা শোনা যাচ্ছে। তা শেষ পর্যন্ত কার্যকর হলে তখন আরও বেশি সংখ্যক অফিসার লাগবে।