গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
অর্থ দফতর এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের হাতে। মন্ত্রিত্বে না-থাকলেও অর্থ দফতরের প্রধান পরামর্শদাতা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তা সত্ত্বেও অর্থ দফতরে বাইরে থেকে পরামর্শদাতা নিয়োগ করতে চাইছে রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রের খবর, শুধু অর্থই নয়, শিল্প, পঞ্চায়েত, পুর ও নগরোন্নয়নের মতো দফতরেও বাইরের পরামর্শদাতা আনা হচ্ছে। সব মিলিয়ে আপাতত ২৩টি দফতরের জন্য বাইরের ৫০ জন পরামর্শদাতাকে বিশেষ সচিব পদের সমতুল মর্যাদা দিয়ে নিয়োগ করা হবে।
অর্থের দায়িত্বে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর পরামর্শদাতা হিসেবে অমিতবাবু। তার উপরে শিল্প দফতরের কাজে গতি আনতে মন্ত্রী-আমলাদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের পর্ষদ গড়া হয়েছে। তবু যে অর্থ, শিল্পের মতো দফতরে বাইরের পরামর্শদাতা নিয়োগ প্রসঙ্গে অনেক প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকের ধারণা, রাজ্যের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে সরকার এক দিকে যেমন সামাজিক প্রকল্পগুলি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তেমনই তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফেরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের লক্ষ্য শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান। সেই দিক থেকে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিতেও বাইরের পরামর্শদাতা নিয়োগের সিদ্ধান্ত সবিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
সরকারি সূত্রের খবর, অর্থ দফতরের জন্য দু’জন পরামর্শদাতা নিয়োগ করা হবে। এক জন ‘ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ বা কর ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পরামর্শ দেবেন। অন্য জনকে নিয়োগ করা হবে ‘পাবলিক ফিনান্স’ পরামর্শদাতা হিসেবে। শিল্প দফতরের জন্য বাইরের এক জন পরামর্শদাতাকে নিয়োগ করছে রাজ্য সরকার। শিল্পায়নের সুযোগ-সম্ভাবনা এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন সংক্রান্ত কাজকর্ম করতে হবে সেই পরামর্শদাতাকে।
অর্থ, শিল্প ছাড়াও পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর (২), জনস্বাস্থ্য কারিগরি (২), পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর (৩), পূর্ত (১), পরিবহণ (২), প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন (২), বিদ্যুৎ (১), খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ (২), সেচ (১), শ্রম (২), তথ্যপ্রযুক্তি (৩), কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার (১৩), কারিগরি শিক্ষা (২), জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন (২), বিপর্যয় মোকাবিলা (১), নারী-শিশু ও সমাজকল্যাণ (২), মৎস্য (১), স্কুলশিক্ষা (১), উচ্চশিক্ষা (১), তথ্য ও সংস্কৃতি (১), পর্যটন (২) দফতরে বাইরের পরামর্শদাতা নিয়োগ করার প্রস্তুতি চালাচ্ছে সরকার।
সরকারি সূত্রের খবর, রাষ্ট্রায়ত্ত বা স্বশাসিত সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়, নামী গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা, পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা পরামর্শদাতার পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন। অবসরপ্রাপ্তদেরও আবেদনের সুযোগ থাকবে। সিনিয়র পরামর্শদাতা মাসে দু’লক্ষ ও পরামর্শদাতারা প্রতি মাসে দেড় লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক পাবেন।