(বাঁ দিকে) টাস্ক ফোর্স গঠনের বিষয়ে নবান্নের নির্দেশিকা। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে রাজ্য স্তরে টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশিকা জারি করল নবান্ন। মোট ১০ দফা দাবির মধ্যে অধিকাংশই মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছিল রাজ্য। তবে সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকে টাস্ক ফোর্স গঠনের বিষয়টি ফের ওঠে। ডাক্তারদের তরফে রাজ্যকে এই বিষয়ে একটি ‘ডিরেক্টিভ’ বা নির্দেশিকা দেওয়ার দাবি জানানো হয়। বৈঠকের পরের দিনই রাজ্যভিত্তিক টাস্ক ফোর্স গঠনের কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ।
মূলত রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়ন, চিকিৎসক-সহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা এবং অভিযোগের নিষ্পত্তি করাই হবে টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের কাজ। সোমবারের বৈঠকেই স্থির হয়েছিল এই রাজ্যভিত্তির টাস্ক ফোর্সের সদস্য কারা হবেন। সেই মতো মঙ্গলবার নবান্নের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি, স্বাস্থ্য সচিব এই টাস্ক ফোর্সের সদস্য হবেন। তা ছাড়াও সদস্য হিসাবে থাকবেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার (সিপি), সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের দুই প্রতিনিধি, জুনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের দুই প্রতিনিধি, রাজ্য অভিযোগ নিষ্পত্তি বিষয়ক কমিটির এক সদস্য এবং পড়ুয়াদের মধ্যে এক জন। তবে তাঁকে মহিলা হতে হবে। মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত করতে সোমবারের বৈঠকেই এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নবান্নের বৈঠকে টাস্ক ফোর্স গঠনের বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদার। তিনি বলেন, ‘‘একটা যেমন স্টেট টাস্ক ফোর্স হচ্ছে, আমরা বলছি প্রত্যেকটা কলেজ স্তরে এ রকম মনিটরিং কমিটিও হোক। যেটা কলেজ লেভেল টাস্ক ফোর্স হবে। সেখানে যেমন অধ্যক্ষ থাকছেন, সুপার থাকছেন, বিভাগীয় প্রধানেরা থাকছেন, সিস্টার-দিদিদের প্রতিনিধি থাকছেন। রোগীর পরিজন থাকতে পারেন। ঠিক তেমনই, জুনিয়র ডাক্তার এবং ছাত্রদের প্রতিনিধিদের রাখা জরুরি।’’ উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘আমরা নিশ্চয়ই এটা কনসিডার করতে পারি । আমার মনে হয় না, এ নিয়ে কোনও সমস্যা হবে।’’ অন্য দিকে, জুনিয়র ডাক্তারেরা সরকারের কাছে বৈঠকের লিখিত নির্যাস চেয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবার দুপুরে লিখিত নির্যাস পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেই মতো বৈঠকে আলোচিত বিষয়গুলির উল্লেখ করে লিখিত আকারে প্রকাশ করেছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ।
নবান্নের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে রাজ্যভিত্তিক এই টাস্ক ফোর্স স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পরিকাঠামো, সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর নজর রাখবে। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় হেল্পলাইন, প্যানিক বাটন সিস্টেম, কেন্দ্রীয় রেফারাল ব্যবস্থার রূপায়ণও খতিয়ে দেখবেন টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা। অভিযোগ জানানোর অভ্যন্তরীণ কমিটি-সহ একাধিক কমিটির কাজও খতিয়ে দেখবে এই টাস্ক ফোর্স। টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা মাসে অন্তত এক বার বৈঠকে বসবেন।