গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ধর্নার দ্বিতীয় দিন রেড রোডের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, তাঁর সরকারই রাজ্যের ২১ লক্ষ মানুষের ১০০ দিনের কাজের বকেয়া মজুরি মেটাবে। এই বিষয়ে রাজ্য যে আর কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবে না, তা-ও স্পষ্ট করে দেন তিনি। কত দিনের মধ্যে ওই টাকা দেওয়া হবে, তা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “২১ লক্ষ মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২১ ফেব্রুয়ারি বকেয়া মজুরির টাকা পৌঁছে যাবে।’’ সেই মতোই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেল প্রশাসনিক মহলে।
সোমবার জেলাশাসকদের সঙ্গে একটি বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব বিপি গোপালিক-সহ অন্য প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। তার পরই কী ভাবে এবং কত দিনের মধ্যে এই কাজ এগোবে, তার একটি রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার আগেই গোটা প্রক্রিয়াটি শেষ করতে চায় নবান্ন।
পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন দফতরের সচিবের তরফ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এক দম নিচু স্তর থেকে উপর তলা পর্যন্ত কী ভাবে এবং কত দিনের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে, তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। বুধবার ১০০ দিনের কাজ করা ‘বঞ্চিত’ প্রাপকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর বিষয়ে বিডিও এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করবেন সব জেলাশাসকেরা। বৃহস্পতিবার তৈরি হবে প্রাপকদের খসড়া তালিকা। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই খসড়া তালিকা এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য খতিয়ে দেখবেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবেন বিডিওরা। ১৯ তারিখের মধ্যে চূড়ান্ত তালিকায় নাম থাকা প্রাপকদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে বলে জানানো হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্ততি।
মমতার ধর্নামঞ্চে শনিবার ১০০ দিনের কাজের ‘বঞ্চিত’ শ্রমিকদের জমায়েত ছিল। তাঁদের উদ্দেশে মমতা প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনারা আমার থেকে কী চান?’’ জবাব আসে, লড়াই। তখন মমতা বলেন, ‘‘লড়াই তো হবেই। লড়াই তো চলবেই। খেলা তো হবেই। তবে আপনাদের টাকা আমারাই দেব। ২১ লক্ষ মানুষের বকেয়া মজুরি ২১ ফেব্রুয়ারি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আমরাই পাঠিয়ে দেব।’’
বিজেপির পরিষদীয় দলের অবশ্য বক্তব্য, ক্যাগের রিপোর্টেই প্রমাণিত যে, বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যে ‘দুর্নীতি’ হয়েছে। বঞ্চিতদের টাকা দেওয়ার কথা বলে রাজ্য সরকার আর এক দুর্নীতির দরজা খুলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ পদ্ম শিবিরের।