(বাঁ দিকে) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।
গত মঙ্গলবারই বিধানসভায় পাশ হয়েছে ধর্ষণ-বিরোধী বিল ‘দ্য অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড (ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৪’। বিধানসভায় পাশ হওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী তা গিয়েছে রাজভবনে। বিলের সঙ্গে প্রয়োজনীয় ‘টেকনিক্যাল রিপোর্ট’ না-থাকায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সেই বিলে সম্মতি দিতে পারছিলেন না বলে জানা গিয়েছিল। শুক্রবার সেই রিপোর্ট তিনি পেয়েছেন। তার পরেই সেই বিল বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল। কিন্তু তার সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন বেশ কিছু মন্তব্যও।
শুক্রবার রাতে রাজভবনের তরফ থেকে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ‘টেকনিক্যাল রিপোর্ট’ পাওয়ার পর রাজ্যপাল অপরাজিতা বিল রাষ্ট্রপতির কাছে বিবেচনার জন্য পাঠিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু বিল সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যপ্রদানে বিধানসভা সচিবালয়ের ব্যর্থতায় বিরক্তি প্রকাশ করেছেন তিনি। বিলটি নিয়ে রাজ্যপাল সম্মতি না দিলে রাজভবনের বাইরে ধর্নার হুমকি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর এ হেন আচরণে ক্ষুব্ধ। রাজ্য সরকারকে তিনি আইনি ও সাংবিধানিক অধিকারগুলি পালনে ব্যর্থতার দিকে নজর দিতে পরামর্শ দিয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, শুক্রবার দুপুরে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ দিন বিকেলের মধ্যেই ‘টেকনিক্যাল রিপোর্ট’ রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়। রাজ্যপাল বিলটি রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য পাঠিয়ে দিয়েছেন। রাজভবনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের বিলটির মতো মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং অরুণাচল প্রদেশের বিলটিও রাষ্ট্রপতির দরবারে আটকে রয়েছে। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, বিলটি পাশ করাতে তাড়াহুড়ো করে ফেলেছে রাজ্য। বেশ কিছু ত্রুটি রয়েছে, যা সংশোধন করা প্রয়োজন। রাজ্যপাল সতর্ক করে বলেছেন, ‘‘তাড়াহুড়ো করে কাজ করবেন না, নইলে পরে অনুতপ্ত হবেন।’’ রাজ্যপাল জানিয়েছেন, বিলটি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত জনগণ অপেক্ষা করতে পারে না। তারা ন্যায়বিচার চায় এবং বিদ্যমান আইনের কাঠামোর মধ্যে তাদের ন্যায়বিচার দিতে হবে। সরকার সঠিক পদক্ষেপ নিলেই জনগণ ন্যায়বিচার পাবে। কন্যাকে হারানো শোকাহত মায়ের চোখের জল মুছিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের।