প্রতীকী ছবি।
দুর্গার অংশভাগিনী হিসেবে তাঁরা এমনিতেই বহু প্রহরণধারিণী। তার উপরে অসুর দলনের জন্য বিভিন্ন দেবতা যেমন দুর্গাকে নানান অস্ত্র দিয়ে সাজিয়েছিলেন, নারীর দুর্দশা রুখতে একই ভাবে সব ধরনের হাতিয়ারে সমৃদ্ধ করা হচ্ছে বাংলার মহিলা পুলিশ বাহিনীকে। বিশেষ করে নারী-নির্যাতনের ঘটনা রুখতে ইতিমধ্যে মহিলা বাহিনী ‘উইনার্স’-কে রাস্তায় নামিয়েছে রাজ্য পুলিশ। এ বার সেই বাহিনীর জন্য আরও ৬৫০টি নতুন স্কুটি কেনার সিদ্ধান্ত নিল নবান্ন। খুব শীঘ্রই ওই নতুন বাহন পুলিশের প্রমীলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।
নারী-নিগ্রহ ঠেকাতে গত এপ্রিলেই ‘উইনার্স’ গঠন করেছে রাজ্য পুলিশ। ৩৩টি পুলিশ-জেলা ও কমিশনারেটে ইতিমধ্যে ওই বাহিনী কাজ শুরু করে দিয়েছে। মূলত নারী সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই রাজ্য পুলিশের কর্তারা কলকাতা পুলিশের ধাঁচে এই বাহিনী তৈরি করেছেন। বাহিনীর মহিলা কনস্টেবলদের নিয়ে ওই বাহিনী গড়া হয়েছে।
মহিলা কলেজ, বাজার, শপিং মলের মতো জায়গায় মোতায়েন থাকছেন উইনার্সের সদস্যারা। রাস্তাঘাটে মহিলাদের যে-কোনও রকম সমস্যা-অসুবিধা দেখে তার সুরাহা করাই তাঁদের কাজ। পুলিশের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে সদাসর্বদা যোগাযোগ রেখে কাজ করবেন ওঁরা।
কলকাতা পুলিশের ধাঁচে ওই বাহিনী গঠিত হলেও জেলা পুলিশের উইনার্স বাহিনীর সদস্যাদের পরনে থাকছে বিশেষ ধরণের কালো ইউনিফর্ম। মাথায় হেলমেট, কোমরে ব্যাটন। সঙ্গে থাকছে ম্যানপ্যাকও।
নবান্ন সূত্রের খবর, সব জেলা মিলিয়ে প্রায় ৬০০ স্কুটি দেওয়া হয়েছে ওই উইনার্স বাহিনীকে। প্রতিটি দলে ১০ থেকে ২০ জন সদস্যা আছেন। সেই সদস্যা-সংখ্যা বাড়ানোর জন্যই নতুন স্কুটি এবং বাইক কেনা হচ্ছে বলে পুলিশি সূত্রের খবর। চলতি মাসের মধ্যেই ওই অতিরিক্ত স্কুটি চলে আসবে রাজ্য পুলিশের হাতে।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, প্রয়োজন হলে ওই মহিলা বাহিনীর সদস্যারা যাতে সব জেলার প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে যেতে পারেন, সেই জন্যই নতুন বাহন কেনা হচ্ছে। জেলাগুলিকে ওই বাহিনীর সদস্যা-সংখ্যা তিরিশের বেশি করতে বলা হয়েছে। এর ফলে সাধারণ মহিলাদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। আবার বাড়তি সদস্যার বন্দোবস্ত হওয়ায় সব জায়গায় নজরদারি চালাতে সুবিধা হবে বলেও জানান ওই পুলিশকর্তা।
জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, মহিলা বাহিনী ইতিমধ্যেই যথেষ্ট জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। শহরের সঙ্গে সঙ্গে গ্রামীণ এলাকাতেও ওই বিশেষ বাহিনী যাতে সমান ভাবে নজরদারি চালায়, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের একটি জেলার পুলিশ সুপার জানালেন, কোথাও কোনও মহিলা বিপদে পড়লে কন্ট্রোল রুমে খবর দিলেই ওই মহিলা বাহিনী পৌঁছে যাচ্ছে তৎক্ষণাৎ।