মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
লকডাউনের সময় থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা প্রকাশ্যে এসেছে। এ নিয়ে তালিকা তৈরি করে তাঁদের কাজের বিকল্প পরিকল্পনাও রাজ্য সরকার শুরু করেছিল। কিন্তু তার পরেও কাজের সন্ধানে ভিন্ রাজ্যে চলে যাওয়া আটকানো যায়নি। বুধবার এমএসএমই-র এক সভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, বাজি, মৎস্য, তাঁত, কৃষি, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কেউ দুর্ঘটনায় মারা গেলে পরিবার দু’লক্ষ টাকা পাবে, আহত হলে পাবেন ৫০ হাজার টাকা। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিমা করাবে সরকার। তাঁদের কেউ মারা গেলে পরিবার সেই টাকা পাবে। বাজি, মৎস্য ভেড়ি, ইট ভাটার সংগঠনকে দিয়ে শ্রমিকদের বিমা করানো হবে।
এ রাজ্যে কাজ খোঁজার প্রস্তাবও এ দিন পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্দেশে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, চর্মশিল্পে আড়াই লক্ষ লোক কাজ করছে। সেখানে আরও ৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প হবে। ফলে আরও পাঁচ লক্ষ লোকের কাজ হবে। ডেউচা পাঁচামিতে সরাসরি এক লক্ষ লোকের চাকরি হবে। পরোক্ষ ভাবে আরও কয়েক লক্ষ চাকরি হবে। বর্ধমান, বীরভূম, মালদহ, মুর্শিদাবাদের মানুষের আয় হবে। মুখ্যসচিবের তত্ত্বাবধানে উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদের পরিযায়ী শ্রমিকদের তালিকা তৈরি হবে। আবাসন নির্মাতাদের সংগঠন নির্মাণ কাজে লাগাবে তাঁদের। সোনা, জরি, দর্জির হাব তৈরির ক্ষেত্রে সরকার সহযোগিতা করবে।
ছোট ব্যবসায়ীদের থেকে অবৈধ উপায়ে টাকা (তোলা) আদায়ে রাশ টানার নির্দেশও দেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন তিনি বলেন, “ক্ষুদ্র ব্যবসা যাঁরা করেন, যাঁরা জিনিসপত্র বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যান, তাঁদের সরকারি পরিচয়পত্র দিতে হবে। তাঁদের থেকে পুলিশ কোনও টাকা আদায় করতে পারবে না। কেউ আলাদা কর নিতে পারবে না। এক শতাংশ এ কাজ করে, বদনাম হয় একশো শতাংশের। টাকা নিলে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী-তে অভিযোগ করুন। আপনার নাম গোপন থাকবে। ভয়ের কারণ নেই।” ছোট-ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্রকে (এমএসএমই) সামনে রেখে নভেম্বরে বিজিবিএস-এর আগে এই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ, মনে করছেন প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকেরা।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড আমরা করেছি। ২৫ হাজার টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে রাজ্য। ঋণের গ্যারান্টর রাজ্য সরকার। পাঁচ লক্ষ টাকা ঋণ না নিয়ে বাইরে যাচ্ছেন কেন! একটু বেশি টাকা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আপনাদের। কিন্তু আপনার জীবনের নিরাপত্তা নেই।” মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, “এক, দুই, তিন লক্ষ টাকায় দোকান তৈরি হতে পারে। চায়ের দোকানে কত টাকা লাগে! চা-বিস্কুট, ঘুগনি, পাউরুটি, চপ বানিয়ে দিলেন। তিন-চার জন কর্মচারী রাখলেন। দোকান জমিয়ে চলবে। বাংলার অর্থনীতি অনেক এগিয়ে গিয়েছে।”