ফাইল চিত্র।
আগামী মে মাসের গোড়ায় ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি হওয়ার কথা। তবে চলতি পরিস্থিতিতে তা কী ভাবে হবে, তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে প্রশাসনের অন্দরে। কারণ, যে সময় দুয়ারে সরকার হওয়ার কথা, সেই সময়েই (৫মে-৫জুন) সরকারের প্রচার কর্মসূচির পরিকল্পনা চলছে রাজ্যজুড়ে। তবে আজ, বুধবার সব দফতরের সচিব, জেলাশাসক এবং পুলিশকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই বৈঠকে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সঙ্গে আবহাওয়া সংক্রান্ত বিষয়েও আলোচনা করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্কুল-কলেজের সময় বা গরমের ছুটি নিয়েও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে সরকার।
আধিকারিকমহলের একাংশ জানাচ্ছেন, ২০২০ সাল থেকে শুরু হওয়া ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির গত তিনটি দফায় বহু মানুষ নানা সুবিধা পেয়েছেন। গত দু’টি ‘দুয়ারে সরকার’-এ ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এ নাম নথিভুক্ত করার জন্য পৃথক বন্দোবস্ত ছিল। ফলে সেই প্রকল্প-সহ স্বাস্থ্যসাথী, নতুন কৃষকবন্ধু ইত্যাদি প্রকল্পে বেশিরভাগ উপভোক্তার নাম নথিভুক্ত হয়েছে। তাই এ বার হয়তো ‘দুয়ারে সরকার’-এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে তৃণমূল সরকারের সাফল্যের প্রচার কর্মসূচি। পরিকল্পনা রয়েছে, ব্লক-পুরসভা পর্যায় পর্যন্ত সরকারের এত দিনের পদক্ষেপের প্রচার হবে। সঙ্গে, দফতর এবং প্রকল্পগুলির কার্যকারিতাও তুলে ধরতে চাইবে সরকার। ফলে অনেকের ধারণা, ‘দুয়ারে সরকার’-এর বৃত্তেই ঢুকে পড়বে প্রচার কর্মসূচি।
এক কর্তার কথায়, “যত দূর বোঝা যাচ্ছে, তাতে আগের বারের মতো পুরোদমে হয়তো দুয়ারে সরকার হবে না। দু’টি কর্মসূচি চলবে একযোগে।” ওই কর্তা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি বন্ধ করে দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা সরকারের নেই। কারণ, এটা সফল কর্মসূচি। ফলে পরিধি কমলেও তা চলবে।
প্রশাসনের অন্য একটি সূত্রের খবর, সরকারের সবচেয়ে বড় প্রকল্পগুলির অন্যতম স্বাস্থ্যসাথী। সেই প্রকল্পের আওতায় প্রায় সব যোগ্য উপভোক্তাকেই আনা হয়েছে। অন্য বড় তথা খুবই খরচসাপেক্ষ প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এ এ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৭৫ লক্ষ মহিলা উপভোক্তা নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। বছরে এই বাবদ প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ভার নিতে হচ্ছে সরকারকে। সরকারের হাতে রয়েছে আরও অনেকগুলি সামাজিক প্রকল্প। সেগুলির সম্মিলিত খরচের অঙ্ক মোটেই কম নয়।
আর্থিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, এই অবস্থায় নতুন উপভোক্তাদের কোনও প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার আগে আর্থিক সংস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি। ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের বাজেটে সব সামাজিক প্রকল্পের সংস্থান ধরা রয়েছে। অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, যে অর্থ ধরা রয়েছে, তা নির্দিষ্ট (অনুমিত) উপভোক্তা সংখ্যার নিরিখে। তার অতিরিক্ত হলে তাতে সমস্যা বাড়তে পারে।