প্রতীকী ছবি।
প্রায় এক যুগ আগে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় পশ্চিম বর্ধমানের বাসিন্দা এক প্রৌঢ়ের। এত দিনে ক্ষতিপূরণ পেতে চলেছে তাঁর পরিবার।
আদালত সূত্রের খবর, এর আগে মৃতের পরিবারকে আট শতাংশ বার্ষিক সুদ-সহ প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য বিমা সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছিল আসানসোলের মোটর অ্যাক্সিডেন্ট ক্লেমস ট্রাইবুনাল। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন করে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থা। সম্প্রতি সেই মামলার রায়ে বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্ত জানান, ট্রাইবুনালের নির্দেশই বহাল থাকবে। এর ফলে ক্ষতিপূরণ বাবদ যে-টাকা (বর্তমানে ১৯ লক্ষ ৯১ হাজার ৯৭৪ টাকা) হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা রয়েছে, মৃতের পরিবার তা তুলতে পারবে।
আদালতের খবর, ২০১০ সালের ২১ অক্টোবর রানিগঞ্জ থেকে একটি গাড়িতে চেপে আমডিহা ফিরছিলেন নারায়ণ গড়াই (৫৮) নামে ওই প্রৌঢ়। বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ কল্লা বাইপাসে একটি ট্রাক তাঁদের গাড়িতে ধাক্কা মারে। গাড়ির সব আরোহীই আহত হন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের।পরে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান নারায়ণবাবু। সেই ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করেন নারায়ণবাবুর স্ত্রী এবং দুই ছেলে। সেই মামলাতেই আসানসোলের ট্রাইবুনাল ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছিল।
ট্রাইবুনালের নির্দেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে গিয়ে বিমা সংস্থা জানায়, দুর্ঘটনা ঘটেছে ট্রাকচালকের জন্য। সেই চালকের বৈধ লাইসেন্সও ছিল না। নারায়ণবাবু পেশায় পরিবহণ ব্যবসায়ী হলেও ট্রাইবুনাল তাঁকে অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং ক্ষতিপূরণের হিসেবেওভুল করেছে। এই যুক্তি দেখিয়েই ট্রাইবুনালের নির্দেশ বাতিলের আর্জি জানান বিমা সংস্থার আইনজীবী আফরোজ আলম। পাল্টা সওয়ালে মৃতের পরিবারের আইনজীবী অমিতরঞ্জন রায় জানান, বিমা সংস্থা ট্রাকচালকের বৈধ লাইসেন্স না-থাকার কথা বলছে, কিন্তু তার দায় মৃতের পরিবারের নয়। ট্রাইবুনাল ক্ষতিপূরণের বিষয়টি বিবেচনার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের কী কী রায় অনুসরণ করেছে, তা-ও জানান তিনি।
দু’পক্ষের বক্তব্য এবং সওয়াল-জবাব শোনার পরে বিচারপতি সামন্ত জানান, ট্রাইবুনাল যে-ভাবে ক্ষতিপূরণের হিসাব কষেছে, হাই কোর্ট তাতে হস্তক্ষেপ করার এখনও প্রয়োজন দেখছে না। শুধু তাই নয়,, বিমা সংস্থার আবেদনও খারিজ করে দেন তিনি।