প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের সব পুরসভায় কর্মী নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশন গড়তে চলেছে রাজ্য সরকার। সেই উদ্দেশ্যেই আনা ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশন বিল, ২০১৮’ বুধবার পাশ হল বিধানসভায়। বিরোধী বামফ্রন্টের তরফে শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বিলটির বিরোধিতা না করলেও কয়েকটি বিষয়ে আপত্তি জানান। কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র জানান, আগে আলোচনা না করে এই বিল বিধানসভায় পেশ করা তিনি সমর্থন করতে পারছেন না।
ওই বিলে বলা হয়েছে, রাজ্যের সব কর্পোরেশন, পুরসভা, নোটিফায়েড এরিয়া কর্তৃপক্ষ, শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ, উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অধীনে বিভিন্ন সংস্থায় কর্মী নিয়োগ করা হবে মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে। অশোকবাবু সভায় জানান, বাম জমানায় কলকাতা পুরসভায় কর্মী নিয়োগের জন্য মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশন ছিল। অন্যান্য পুরসভাও চাইলে ওই কমিশন মারফত কর্মী নিয়োগ করতে পারত। এ বার রাজ্য সরকার রাজ্যের সব পুরসভায় ওই কমিশন মারফত নিয়োগ বাধ্যতামূলক করতে নতুন বিল আনল। তাই তাদের বিলটি আগে সিলেক্ট কমিটিতে আলোচনা করা উচিত ছিল। অশোকবাবু আরও বলেন, পুরসভাগুলিতে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ ওই কমিশনের আওতার বাইরে রেখে স্থানীয় ভাবে করাই ভাল। কমিশনের স্বশাসন শেষ পর্যন্ত বজায় থাকবে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন অশোকবাবু।
জবাবি ভাষণে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অশোকবাবুর আর্জি মেনে জানান, ‘গ্রুপ ডি’ পদে নিয়োগ স্থানীয় ভাবে পুরসভাগুলিই করবে। পরে কর্মীদের পদোন্নতিও ওই কমিশনের মাধ্যমেই করার ব্যবস্থা হবে।
কংগ্রেসের অসিতবাবু বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মী নিয়োগে স্বচ্ছতা আনার জন্য রাজ্যে পাবলিক সার্ভিস কমিশন, স্কুল সার্ভিস কমিশনের মতো অনেক কমিশনই রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বহু ক্ষেত্রেই নিয়োগে অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠছে। সুতরাং, মিউনিসিপ্যাল কমিশনও যে স্বচ্ছ ভাবে নিয়োগ করতে পারবে, তার নিশ্চয়তা কী? মন্ত্রী অবশ্য বলেন, ‘‘রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ঠেকাতে এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই এই বিল আনা হয়েছে।’’
অসিতবাবু আরও বলেন, ওই বিলের মাধ্যমে পুরসভাগুলির হাতে থাকা বিকেন্দ্রীভূত ক্ষমতার কেন্দ্রীভবন করার চেষ্টা হচ্ছে। তবে মন্ত্রী সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন। কান্দির ‘দলত্যাগী’ বিধায়ক অপূর্ব সরকার অবশ্য বিলকে সমর্থন করে বলেন, কমিশনের মধ্য দিয়ে না গেলে পুরসভাগুলিতে বিশেষজ্ঞ কর্মী পাওয়া সম্ভব নয়। তাঁর আরও অনুরোধ, কমিশন মারফত কর্মীদের বদলির সংস্থানও যেন থাকে।