Bengal Post-Poll violence

ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’ নিয়ে হাই কোর্টে রিপোর্ট ডিজির, ১২ জুন পর্যন্ত ৫৬০টি অভিযোগ এসেছে ইমেলে

ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’ নিয়ে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট হাই কোর্টে জমা দিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি। কত অভিযোগ জমা পড়েছে, জানিয়েছেন তা-ও। আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২৪ ১৫:৩৫
Share:

কলকাতা হাই কোর্ট। — ফাইল চিত্র।

ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’ মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে রিপোর্ট জমা দিল রাজ্য। এখনও পর্যন্ত কতকগুলি এফআইআর দায়ের হয়েছে এবং কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা নিয়ে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। একটি সংগঠন এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’ নিয়ে মামলা করেছিলেন হাই কোর্টে। সেই মামলা দু’টি নিয়ে হাই কোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য পুলিশের ডিজির তরফে গত ১৪ জুন এই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার এই মামলা শুনানির জন্য উঠেছিল। আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য এবং সূর্যনীল দাস জানিয়েছেন, মামলার সব পক্ষের কাছে রিপোর্ট না থাকায় শুনানি হয়নি। আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি হবে।

গত ৬ জুন হাই কোর্ট জানায়, হিংসা আটকাতে জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে যৌথ ভাবে কাজ করতে হবে কেন্দ্র এবং রাজ্যকে। রাজ্য পুলিশের ডিজি সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়কে ভোট পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত অভিযোগ ইমেলের মাধ্যমে নিতে বলেছে হাই কোর্ট। অভিযোগগুলির গুরুত্ব বুঝে সংশ্লিষ্ট থানায় তা পাঠাবেন ডিজি। থানাকে তার ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করতে হবে। প্রতি ঘটনায় আইন অনুযায়ী দ্রুত এবং উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে বলেছে আদালত। রাজ্যে ভোটের পরে ‘হিংসা’ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে মামলাটি করেছিল ‘রাষ্ট্রবাদী আইনজীবী’ নামে একটি সংগঠন।

Advertisement

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

অন্য দিকে, শুভেন্দু দাবি করেন, ভোটের পরে ‘হিংসা’ ছড়িয়েছে রাজ্যে। ‘আক্রান্ত’ হচ্ছেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। আরও বেশি দিন রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার আবেদন জানিয়ে এবং ‘আক্রান্ত’-দের নিরাপত্তা চেয়ে ১০ জুন হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু। ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’-র সম্ভাবনার কথা নজরে রেখে নির্বাচন কমিশন আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে জানিয়েছিল, ১৯ জুন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে। শুভেন্দুর দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে সেই সময়সীমা আরও দু’দিন বৃদ্ধি করে হাই কোর্ট। নির্দেশ দেয়, রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে ২১ জুন পর্যন্ত। আদালতে কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার প্রয়োজন হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কোনও অসুবিধা নেই।

ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’ পরিস্থিতির মোকাবিলায় রাজ্য পুলিশ কী কী পদক্ষেপ করেছে, এই দুই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তা জানতে চায় হাই কোর্ট। ১৪ জুনের মধ্যে সেই রিপোর্ট দিতে বলা হয় ডিজিকে। মঙ্গলবার রাজ্য পুলিশের ডিজির হয়ে সেই রিপোর্ট জমা দিলেন ইনস্পেক্টর জেনারেল শঙ্খশুভ্র চক্রবর্তী। তাতে জানানো হয়েছে, ৬ থেকে ১২ জুন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ডিজির কাছে ইমেলের মাধ্যমে ৫৬০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। হাই কোর্টের নির্দেশ পেয়ে নতুন করে এই ইমেল আইডি খুলেছিলেন ডিজি। সেই ইমেলের মাধ্যমে পাওয়া মোট অভিযোগের মধ্যে ১০৭টি ক্ষেত্রে এফআইআর দায়ের হয়েছে। ৯২টি অভিযোগ বিচার্য অপরাধ বলে মনে করা হয়নি। ১১৪টি অভিযোগের ক্ষেত্রে অনুসন্ধান করে সারবত্তা মেলেনি। ৮৮টি ক্ষেত্রে একই মামলায় ভুয়ো অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ১৮টি অভিযোগ ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয়। তিনটি অভিযোগ অসম্পূর্ণ। ১৩৮টি ক্ষেত্রে খতিয়ে দেখা হচ্ছে অভিযোগ।

বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, নাগরিকের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা নিয়ে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান জানাতে হবে রাজ্যকে। আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement