ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় রাজ্য এবং কেন্দ্রকে একত্রে কাজের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসা রুখতে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারকে একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, হিংসা আটকাতে জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে যৌথ ভাবে কাজ করতে হবে কেন্দ্র এবং রাজ্যকে। পুলিশ কোনও ভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে কেন্দ্রীয় বাহিনীও হস্তক্ষেপ করতে পারবে বলে জানিয়েছে আদালত।
রাজ্য পুলিশের ডিজি সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়কে ভোট পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত অভিযোগ ইমেলের মাধ্যমে নিতে বলেছে হাই কোর্ট। অভিযোগগুলির গুরুত্ব বুঝে সংশ্লিষ্ট থানায় তা পাঠাবেন ডিজি। থানাকে তার ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করতে হবে। প্রতি ঘটনায় আইন অনুযায়ী দ্রুত এবং উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে বলেছে আদালত।
রাজ্যে লোকসভা নির্বাচন শেষ হয়েছে গত ১ জুন। তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ভোট পরবর্তী হিংসায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করে একটি সংগঠন। ‘রাষ্ট্রবাদী আইনজীবী’ নামের ওই সংগঠনের বক্তব্য, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা ঘটছে। তাতে প্রাণহানিও ঘটছে। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ নিচ্ছে না। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়।
আদালতের নির্দেশ, ভোটের পর বিভিন্ন হিংসার মামলায় জীবন এবং সম্পত্তি রক্ষা করতে রাজ্য এবং কেন্দ্রকে যৌথ ভাবে কাজ করতে হবে। নাগরিকদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য নতুন ইমেল আইডি তৈরি করবেন ডিজি। সেখানে এই সংক্রান্ত অভিযোগ তিনি গ্রহণ করবেন। অভিযোগগুলির গুরুত্ব বিচার করে পাঠিয়ে দেবেন থানায়।
মামলাকারী সংগঠনের আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত সওয়াল করেন, ‘‘নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অশান্তি হচ্ছে। এর ফলে এখনও পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ কোনও অভিযোগই নিচ্ছে না।’’ আদালতে এই অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে রাজ্য সরকার।
আদালতের নির্দেশ, ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে কোনও থানায় এফআইআর দায়ের হলে রাজ্য পুলিশের ওয়েবসাইটে তা প্রকাশ করতে হবে। তদন্তের উপর নজর রাখবেন ডিজি স্বয়ং। মামলার আগামী শুনানিতে ডিজিকে ব্যক্তিগত ভাবে হলফনামা দিয়ে আদালতে জানাতে হবে, ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কতগুলি অভিযোগ জমা পড়েছে এবং তার মধ্যে কতগুলি ঘটনায় এফআইআর দায়ের হয়েছে।