প্রতীকী ছবি।
কেরোসিনের সরবরাহ রয়েছে। অথচ তার সদ্ব্যবহার হচ্ছে না। তাতে কেন্দ্রের বরাদ্দ ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা বাড়ছে। তার মাঝে গ্রাহকের প্রাপ্য পরিমাণ কমল। রাজ্যের অবশ্য দাবি, গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে বলে বরাদ্দ কমানো হয়েছে।
রাজ্যের ৯.৩২ কোটি মানুষ কেরোসিন পেতেন। জুন মাসে তা বেড়ে হয়েছে ৯.৮২ কোটি গ্রাহক। সংখ্যা বাড়তেই মাসিক প্রাপ্য কমছে আমজনতার। এতদিন পর্যন্ত ডিজিটাল রেশনকার্ডধারীরা (বিশেষ এলাকা ছাড়া) মাথাপিছু ৬০০ মিলিলিটার (এমএল) কেরোসিন মাসে পেতেন। এখন থেকে তাঁরা ৫০০ এমএল পাবেন। প্রথমে জুলাই থেকে সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কথা বলে খাদ্য ও সরবরাহ দফতর। পরবর্তীতে (৪ জুন) দফতর স্থির করে, জুন মাস থেকে গ্রাহকের প্রাপ্য পরিবর্তন হবে।
একদা ৭.৭৪ কোটি গ্রাহক ৬০০ এমএল কেরোসিন পেতেন। জুন মাস থেকে সেই গ্রাহক বেড়ে হয়েছে সাড়ে ৮ কোটি। আর রাজ্যের ১১টি জেলায় বিশেষ রেশন কার্ড থাকা গ্রাহকরা ১ লিটার কেরোসিন পান। তাঁদের বরাদ্দে অবশ্য কোনও পরিবর্তন হয়নি। আলিপুরদুয়ারের সব গ্রাহক ১ লিটার কেরোসিন পান। এ বার জেলার নতুন ৬৭ হাজার গ্রাহক চলতি মাসে ৫০০ এমএল কেরোসিন পাবেন। এই বৈষম্য নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। চার জেলার কাগজের রেশন কার্ড (বিশেষ এলাকা ছাড়া) থাকা গ্রাহকরা ১৫০ এমএল কেরোসিন পাবেন। বহু ডিলারের দাবি, কাগজের রেশন কার্ড ডিজিটালে পরিণত হলেই সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের প্রাপ্য বাড়ছে।
জুনে গ্রাহক সংখ্যা বাড়লেও বরাদ্দ (৫৮,৬৬৮ কিলোলিটার) কেরোসিন থেকে তিন হাজার কিলোলিটারের বেশি উদ্বৃত্ত (অবিক্রিত) থেকে যাবে বলে মত ডিলারদের অনেকের। জুন মাসের উদ্বৃত্ত জুলাই মাসে যোগ হলে তা আরও বেড়ে যাবে। অথচ প্রাপ্য কমল। জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে খাদ্য দফতরকে পাঠানো চিঠিতে পশ্চিমবঙ্গ কেরোসিন ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, প্রতি ত্রৈমাসিকে বরাদ্দ সম্পূর্ণ ব্যবহার না করতে পারলে কেন্দ্রীয় সরকার তা ছাঁটাই করার সুযোগ পেয়ে যাবে। ওই চিঠিতেই বরাদ্দ অনুসারে রাজ্যের সব গ্রাহককে কেরোসিন সমবন্টনের দাবি করেছে অ্যাসোসিয়েশন। তাদের মতে, সমবন্টন হলে বরাদ্দ উদ্বৃত্ত থাকবে না। আর কেন্দ্র প্রয়োজন নেই বলে ছাঁটাইও করতে পারবে না।
গ্রাহকের প্রাপ্য পরিবর্তনের বিজ্ঞপ্তিতে রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের যুক্তি, গ্রাহক সংখ্যা বাড়ায় প্রাপ্যের পরিবর্তন করা হয়েছে। বরাদ্দ যেখানে সম্পূর্ণ ব্যবহার করা যাচ্ছে না, সেখানে প্রাপ্য হ্রাসের কারণ স্পষ্ট নয়। এই বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। কেরোসিনের দাম এবং রাজ্যের মোট বরাদ্দ কেন্দ্র স্থির করলেও মাথাপিছু বন্টন প্রক্রিয়া নির্ধারণ করে রাজ্য সরকার।