Bratya Basu

Education Policy: শিক্ষানীতি-সঙ্ঘাত, মোদী সরকারের পাল্টা নীতি তৈরি করতে কমিটি গড়ল মমতার সরকার

কমিটির সদস্যদের মধ্যে প্রথম নাম গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাকের। এই প্রথম গায়ত্রী তৃণমূল সরকারের কোনও কমিটির সদস্য হলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২২ ২০:৩১
Share:

কেন্দ্রের সঙ্গে সঙ্ঘাতের পথে রাজ্য। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতির পাল্টা নিজস্ব শিক্ষানীতি তৈরি করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, সেই নীতি নির্ধারণ করতে দশ সদস্যের একটি কমিটিও তৈরি করা হয়েছে। ওই কমিটির সদস্যদের মধ্যে প্রথম নামটি গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাকের। এই প্রথম গায়ত্রী তৃণমূল সরকারের কোনও কমিটির সদস্য হলেন। রাজ্যের নিজস্ব শিক্ষানীতি তৈরির জন্য এই কমিটি গড়ার মধ্য দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের মোদী-বিরোধী অবস্থান আরও জোরালো করার বার্তা দিল।

Advertisement

রাজ্যের জন্য আলাদা শিক্ষানীতির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে প্রশ্ন করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। ব্রাত্য বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার যে শিক্ষানীতি তৈরি করেছে সেটা মিসিগান এবং অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের হুবহু অনুকরণ। আমরা সেই টোকা শিক্ষানীতি মানছি না। তাই নিজস্ব শিক্ষানীতি তৈরির এই উদ্যোগ।’’ কত দিনের মধ্যে এই কমিটি নতুন শিক্ষানীতি রূপায়ণ করবে? জবাবে ব্রাত্য বলেন, ‘‘আমরা কোনও সময়সীমা বেঁধে দিইনি। তবে যত দ্রুত সম্ভব শেষ করার কথা বলা হয়েছে।’’

আমেরিকার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা গায়ত্রী ছাড়াও ওই কমিটিতে রয়েছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুগত বসু, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস, দুর্গাপুরের ন্যশনাল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির ডিরেক্টর অনুপম বসু, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈকত মৈত্র, শিক্ষাবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি, রাজ্যের সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার, সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়। এ ছাড়াও উচ্চমাধ্যমিক সংসদ এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য এবং কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় রয়েছেন রাজ্যের নিজস্ব শিক্ষানীতি তৈরির ওই কমিটিতে।

Advertisement

রাজ্যের কমিটিতে রয়েছেন গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক, সুগত বসু, সুরঞ্জন দাস, অনুপম বসু, সৈকত মৈত্র, নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি-সহ দশ জন। ফাইল চিত্র

কমিটি কোন কোন বিষয়ে নজর রেখে শিক্ষানীতি তৈরি করবে তা-ও বলে দেওয়া হয়েছে শিক্ষা দফতরের ওই নির্দেশিকায়। বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি ঘোষণার পরে মহারাষ্ট্র এবং কেরল সরকার কী নীতি নিয়েছিল তা দেখতে হবে। দেখতে হবে ২০২০ সালের পরে শিক্ষা মন্ত্রক এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কী কী গাইডলাইন দিয়েছে। এই সব দেখে রাজ্য সরকারের কেমন পদক্ষেপ করা দরকার সেটা জানানোর সময়ে খেয়াল রাখতে হবে, রাজ্যের পড়ুয়া তথা শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক স্বার্থ যেন রক্ষা পায়। এই নির্দেশিকা প্রকাশের দু’মাসের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার জন্যও কমিটিকে অনুরোধ করা হয়েছে। কমিটিকে প্রয়োজনী সহযোগিতা করবেন রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের স্পেশাল কমিশনার অরূপ সেনগুপ্ত এবং স্কুল শিক্ষা দফতরের অন্য কর্তারা।

আরও পড়ুন:

নরেন্দ্র মোদীর সরকার দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরেই কেন্দ্র নতুন শিক্ষানীতি রূপায়ণের তোড়জোড় শুরু করে। সেই নির্দেশিকা ঘোষিত হয় ২০২০-র ৩০ জুলাই। বলা হয়েছিল, প্রথম শ্রেণিতে পড়ার আগে ৩ বছরের প্রাক‌‌্স্কুল শিক্ষা চালু হবে। সেই সঙ্গে এখনকার মতো ১০+২ স্কুল শিক্ষার বদলে ৫+৩+৩+৪ ব্যবস্থা। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও নানা বদল আনা হয়। কেন্দ্রের ঘোষণার পরে প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষানীতির বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। রাজ্যে সেই নীতি মানা হবে না বলেও দলের পক্ষে অনেকবার আওয়াজ তোলা হয়েছে। এ বার রাজ্যের জন্য কেন্দ্রের পাল্টা শিক্ষানীতির উদ্যোগ নিল নবান্ন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement