বৃহস্পতিবার মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ লকেটের। টুইটার
প্রথমে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। তার পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার পর একেবারে খোদ প্রধানমন্ত্রী। রাজধানীতে গত কয়েক দিনে বিজেপি-র তিন ওজনদার নেতার সঙ্গে দেখা করেছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। একা। একান্তে। মোদীর সঙ্গে তিনি দেখা করেছেন বৃহস্পতিবার সকালে। এবং অবিশ্বাস্য দ্রুততায় সেই ছবি টুইট করেছেন। সঙ্গে ক্যাপশন, ‘নবরাত্রির মধ্যে আশীর্বাদ প্রার্থনা করতে গিয়েছিলাম।’
কিন্তু তাতে জল্পনা থামছে না। জল্পনা এই নিয়ে যে, আচমকা লকেট পর পর নড্ডা, শাহ, মোদীর সঙ্গে একান্তে দেখা করতে গেলেন কেন? গিয়ে কী বললেন? তাঁরাই বা লকেটকে পাল্টা কী বললেন? প্রশ্ন করায় আনন্দবাজার অনলাইনকে লকেট সেই কথাই বলেছেন, যা তিনি টুইটারে জানিয়েছেন, ‘‘নবরাত্রি চলছে, তাই আমি প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদ নিতে গিয়েছিলাম। আমি নবরাত্রি পালন করছি। মোদীজিও পালন করেন। সে সব নিয়ে কথা হল। আর উত্তরাখণ্ডের নির্বাচনের পরে এই প্রথম বার ওঁর মুখোমুখি হলাম। সেখানকার অভিজ্ঞতাও শুনলেন। আরও ভাল করে কাজ করতে বললেন।’’
বাজেট অধিবেশন চলার মধ্যেই রাজ্যের বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী মোদীর। পর পর দু’বার সেই বৈঠকের দিন ক্ষণ ঠিক হয়। কিন্তু মোদীর ব্যস্ততার কারণে তা বাতিলও হয়ে যায়। তা সত্ত্বেও একা লকেটের সঙ্গে মোদীর দেখা হওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে জল্পনা। যদিও লকেটের দাবি, সবগুলিই সৌজন্য সাক্ষাৎ। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর আলোচনার মূল বিষয় ছিল ‘নবরাত্রি পালন’।
হুগলির সাংসদ লকেট রাজ্য বিজেপি-র অন্যতম সাধারণ সম্পাদক। তবে নতুন কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে ইঙ্গিত মিলতে থাকে। কমিটিতে জায়গা না পাওয়াদের সমর্থনে মুখও খোলেন লকেট। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগের দিন জয়প্রকাশ মজুমদারের সঙ্গে বৈঠকও করেন। কলকাতায় দলের সাংগঠনিক বৈঠকে তাঁর সরব হওয়া নিয়েও প্রশ্ন ওঠে গেরুয়া শিবিরে। রাজ্যে লকেটকে সে ভাবে কেন দেখা যাচ্ছে না প্রশ্নের উত্তরে প্রথম দিকে বলা হচ্ছিল, উত্তরাখণ্ড বিধানসভা নির্বাচনের সহ-পর্যবেক্ষক হওয়ায় তিনি রাজ্যে কম সময় দিচ্ছেন। কিন্তু উত্তরাখণ্ডের ভোট পর্ব মিটে সরকার গঠন হয়ে গেলেও রাজ্যে বিশেষ দেখা যায়নি লকেটকে। বালিগঞ্জ বিধানসভা ও আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনের প্রচারে কারা অংশ নেবেন জানিয়ে রাজ্য বিজেপি যে তালিকা প্রকাশ করে তাতেও নাম ছিল না লকেটের। তা নিয়ে দলের ভিতরে ও বাইরে অনুযোগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘দল আমায় গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে না বলেই সম্ভবত তালিকায় নাম রাখেনি।’’
এই সব বিতর্কের মধ্যেই গত ৩০ মার্চ সংসদ ভবনে নড্ডার ঘরে একাই যান লকেট। বিজেপি শিবিরে অনেকে মনে করছেন রাজ্য নেতৃত্ব নিয়ে তাঁর যে অনুযোগ রয়েছে, সে সব সর্বভারতীয় সভাপতিকে বলে থাকতে পারেন লকেট। এর পরে বুধবার শাহের সঙ্গে দেখা করেন লকেট। সঙ্গে ছিলেন ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম। বিজেপি সূত্রে খবর, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দুই সাংসদ শাহের সঙ্গে আলোচনা করেন। যদিও লকেটের দাবি, সবটাই ছিল নিছক সৌজন্য বিনিময়।