থানার সামনেই বোমা, ভাটপাড়ায় ১৪৪ ধারা

সব মিলিয়ে আতঙ্ক এমন ভাবে ছড়িয়ে গেল যে বেলার দিকে মনে হল, এলাকায় বন্‌ধ ডাকা হয়েছে। জনবিরল রাস্তায় পুলিশ আর র‌্যাফের টহল। বিকেলে ভাটপাড়া থানা এলাকায় নতুন করে ১৪৪ ধারা জারি করল প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৯ ০৩:৩৬
Share:

অশান্ত: র‌্যাফের সামনেই বোমাবাজি। সোমবার কাঁকিনাড়ায়। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

সেই বোমাবাজি, সেই একই কায়দায় ভাঙচুর-লুটপাট, রেল অবরোধ— সেই একই আতঙ্কের পরিবেশ। ফের ১৪৪ ধারা।

Advertisement

শনিবার রাত থেকেই বোমাবাজি শুরু হয়েছিল কাঁকিনাড়ায়। সোমবার সকাল শুরু হল রেল অবরোধ দিয়ে। তার পর ভাটপাড়া থানার কাছেই পুলিশের সামনেই চলল বোমা নিয়ে তাণ্ডব। ভাঙচুর হল ভাটপাড়া পুরসভা এবং হাসপাতাল। এ দিন বোমায় জখম হলেন দু’জন।

সব মিলিয়ে আতঙ্ক এমন ভাবে ছড়িয়ে গেল যে বেলার দিকে মনে হল, এলাকায় বন্‌ধ ডাকা হয়েছে। জনবিরল রাস্তায় পুলিশ আর র‌্যাফের টহল। বিকেলে ভাটপাড়া থানা এলাকায় নতুন করে ১৪৪ ধারা জারি করল প্রশাসন।

Advertisement

শনিবার রাতে বোমাবাজির পরে কাঁকিনাড়া বাজারে দোকানপাট আর খোলেনি। রবিবারও দু’দফা বোমাবাজি হয় কাঁকিনাড়া ৫ ও ৬ নম্বর রেলওয়ে সাইডিং এবং ঘোষপাড়া রোডে। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ফের রেলওয়ে সাইডিং এবং কাঁটাপুকুর এলাকায় বোমাবাজি শুরু হয়। আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফিরছিল বছর সাতেকের ময়না খাতুন। বোমার স্‌প্লিন্টার লাগে তার পায়ে।

শনিবার রাতে পুলিশ কাঁটাপুকুরে রেলের পরিত্যক্ত একটি কোয়ার্টার থেকে প্রায় শ’খানেক তাজা বোমা উদ্ধার করে। বাজেয়াপ্ত করা হয় প্রচুর বোমার মশলা। রবিবার সকালেও উদ্ধার হয় আর কুড়িটি তাজা বোমা।

সকাল ন’টা নাগাদ কাঁকিনাড়া স্টেশনের সামনে রেল রুখে বোমাবাজির প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেন রেলওয়ে সাইডিং এবং নয়াবাজার এলাকার বাসিন্দারা। অবরোধে পড়ে বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। ভোগান্তি হয় স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদেরও। পরে শিয়ালদহ ও ব্যারাকপুরের মধ্যে ট্রেন চালানো হয়। সাড়ে ১০টা নাগাদ অবরোধ তুলে দেয় পুলিশ। তার পরেই অবরোধকারীরা ঘোষপাড়া রোডে ভাটপাড়া থানার সামনে চলে আসেন। থানার উল্টো দিকেই ভাটপাড়া পুরসভা। ক্ষিপ্ত জনতা পুরসভার একটি ঘরে ঢুকে কম্পিউটার এবং আসবাব ভাঙচুর করে। এর পরেই পুরসভা পরিচালিত হাসপাতালে হামলা করেন বিক্ষোভকারীরা। সেখানেও আসবাবপত্র এবং কম্পিউটার ভাঙচুর করা হয়। পুরপ্রধান সৌরভ সিংহের অভিযোগ, টাকার বাক্সটিও তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এই ঘটনার পরেই এক দল দুষ্কৃতী আচমকা থানার কাছেই ঘোষপাড়া রোডের উপরে বোমাবাজি শুরু করে। এতে কার্যত দিশাহারা হয়ে পড়ে পুলিশ। রাস্তায় যে সামান্য লোকজন ছিলেন, আতঙ্কে তাঁরা ছোটাছুটি শুরু করে দেন। জখম হন দু’জন। বেশ কিছু ক্ষণ টানা বোমাবাজি চলে। পরে পুলিশ তাড়া করলে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (‌জোন ১) অজয় ঠাকুর বলেন, ‘‘রবিবার রাতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবারের ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement