দার্জিলিং জেলায় নির্বাচনী প্রস্তুতিতে কড়া নজর রাখছে স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক দফতর এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ফাইল চিত্র।
শেষ বার দার্জিলিং জেলায় গিয়ে সেখানেও পঞ্চায়েত ভোট করানোর কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী বছর বঙ্গের অন্যান্য জেলার সঙ্গে দার্জিলিঙে পঞ্চায়েত ভোট করানোরই সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। প্রস্তুতিও চলছে একসঙ্গে। পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোট হতে চলেছে প্রায় ২২ বছর পরে। তবে রাজ্যের অন্যান্য জায়গার মতো ত্রিস্তর নয়, পাহাড়ে এই ভোট হবে দ্বিস্তরীয়।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দার্জিলিং জেলায় নির্বাচনী প্রস্তুতিতে কড়া নজর রাখছে স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক দফতর এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন। চলতি পরিস্থিতিতে এত দিন বাদে পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোট প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক শিবিরের অনেকে। তাঁদের পর্যবেক্ষণ, পাহাড়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের শক্তি বৃদ্ধির সুবাদে পঞ্চায়েতে তারা কিছু আসন পেলে সেখানে রাজনৈতিক সমীকরণ অনেকটা বদলে যেতে পারে। সেখানে পঞ্চায়েতের শেষ ভোট হয় ২০০০ সালে। এ বার পাহাড়ে দ্বিস্তরীয় ভোট হবে ৭০টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পাঁচটি পঞ্চায়েত সমিতির জন্য।
দার্জিলিং-সহ সব জেলাতেই ‘ডিলিমিটেশন’ বা এলাকা পুনর্বিন্যাস এবং আসন সংরক্ষণের কাজ করছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকেরা জানান, ডিজিএইচসি বা দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিল থাকাকালীন সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সেখানে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট হবে না। তা সংবিধানেও অন্তর্ভুক্ত আছে। এখন ডিজিএইচসি নেই, রয়েছে জিটিএ। তাদের আইনে পুরো পঞ্চায়েত ভোট হতেই পারে। কিন্তু ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট করাতে গেলে সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন। তাই দুই স্তরে ভোটের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, “নব নির্বাচিত পঞ্চায়েত এবং সমিতি এলে তারা নিশ্চয়ই জিটিএ-র সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করবে।” প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে জানাচ্ছেন, পাহাড়ের পরিষেবা নিশ্চিত করার প্রশ্নেও এই ভোট খুব জরুরি। সড়ক, জল, নিকাশি ইত্যাদি বিষয়ে দীর্ঘ কাল ধরেই নানা দাবি জানিয়ে আসছেন পাহাড়বাসী। গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে জনপ্রতিনিধি থাকলে তাঁদের কাছে মানুষ দাবিদাওয়া জানাতে পারবেন। কাজের সুযোগও তৈরি করা যাবে।