ফাইল চিত্র।
ইতিমধ্যেই তামিলনাড়ু ও পুদুচেরিতে পৌঁছে গিয়েছে কেন্দ্রীয় দল। মহল্লায় মহল্লায় ঘুরে দলের সদস্যেরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন রোগের উৎস। দিচ্ছেন মশা নিয়ন্ত্রণের দাওয়াই। উপসর্গ ডেঙ্গির সঙ্গে মিললেও কেন রক্ত পরীক্ষায় রোগটা সঠিক ভাবে ধরা পড়ছে না খতিয়ে দেখছেন তা-ও।
‘অজানা’ জ্বরের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে কিন্তু এমন দলের দেখা নেই। দেগঙ্গা, বারাসত, বসিরহাট, হাবরা, অশোকনগর, খড়দহ, কামারহাটি, নিউটাউন, দক্ষিণ দমদমে প্রতিদিনই জ্বরে মানুষ মারা যাচ্ছেন। ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে মৃত্যুর আসল কারণটা ধরা পড়ছে। অন্যত্র চিকিৎসকেরা কোথাও লিখছেন, মাল্টি অর্গান ফেলিওর, কোথাও শক সিন্ড্রোম, কোথাও ফেব্রাইল ইলনেস, কোথাও সেপটিসেমিয়া। অনেক ক্ষেত্রে ডেথ সার্টিফিকেটে ‘আননোন ফিভার’ বা অজানা জ্বরই লেখা হচ্ছে।
তা হলে কেন পশ্চিমবঙ্গে দল পাঠাল না কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক? মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, কোনও রাজ্য সাহায্য চাইলে অথবা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক রাজ্যের পাঠানো রিপোর্ট দেখে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে দল পাঠায়। দলে এপিডেমিওলজিস্ট, পতঙ্গবিদ, পরজীবী বিশেষজ্ঞ এবং মেডিসিনের চিকিৎসকেরা থাকেন। তাঁরা এলাকায় এলাকায় ঘোরেন। সবার সঙ্গে কথা বলেন, রোগীদের দেখেন এবং নানা তথ্য সংগ্রহ করে দিল্লি ফিরে আসেন। ‘‘তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরি তাদের ডেঙ্গি সংক্রমণের যে রিপোর্ট পাঠিয়েছে তাতে আমাদের মনে হয়েছে সেখানে দল পাঠানো দরকার। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ গত এক মাস কোনও রিপোর্টই পাঠায়নি, পরিদর্শকও চায়নি,’’ বললেন মন্ত্রকের এক কর্তা। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্র নিজে থেকে দল পাঠাতে পারে না বলেই তাঁর মত।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আক্ষেপ, ‘‘রাজ্য প্রশাসন যদি নিজেদের ভাল না বোঝে তা হলে কেন্দ্র কী ভাবে সমস্যার সমাধান করবে!’’ রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তার অবশ্য আশঙ্কা, যে কোনও পতঙ্গবাহিত রোগ প্রতিরোধের ব্যাপারে কীটনাশক, ওষুধের মতো পরিকাঠামোগত সাহায্য কেন্দ্রই দেয়। কেন্দ্রে যথাযথ তথ্য না গেলে আগামী বছরের জন্য বরাদ্দ কমতে পারে বলেই তাঁর আশঙ্কা।