CV Ananda Bose vs West Bengal Government

রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে নবান্ন! আটটি বিল আটকে রাখার অভিযোগ শুনবেন প্রধান বিচারপতি

আদালতের কাছে দ্রুত এই বিষয়টি শোনার আর্জি জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। এ সংক্রান্ত একটি রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪ ১৩:৫৩
Share:

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

পশ্চিমবঙ্গে নবান্ন বনাম রাজভবনের লড়াই আরও এক ধাপ এগোল।

Advertisement

শুক্রবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেল পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার। তাদের অভিযোগ, রাজ্যের উন্নতি কল্পে সরকার প্রণীত আটটি বিল আটকে রেখেছেন রাজ্যপাল। আর এ কাজ করে তিনি শুধু সংবিধানের বিধানই ভাঙেছেন না, সুশাসনের ক্ষেত্রে প্রতিকূলতাও তৈরি করছেন।

শুক্রবার রাজ্য সরকারের আইনজীবী সঞ্জয় বসু জানান, ওই আটটি গুরুত্বপূর্ণ বিল আটকে রাখার অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট আবেদন দায়ের করে বিষয়টি দ্রুত শুনানির আর্জি জানানো হয়েছিল রাজ্য সরকারের তরফে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে সেই আর্জি গ্রহণ করেছেন।

Advertisement

গত মাস খানেক ধরেই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার বনাম রাজ্যপালের সংঘাত চলছে। তৃণমূলের দুই বিধায়কের শপথগ্রহণকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের বিরোধ অন্য মাত্রা নেয় নবান্নে বসে রাজভবনে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলায়। সেই ঘটনার জেরা রাজভবন বনাম রাজ্যপাল বিরোধ গিয়ে পৌঁছয় হাই কোর্টে। মুখ্যমন্ত্রী মমতার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন রাজ্যপাল। এ বার নবান্ন সুপ্রিম কোর্টে গেল রাজ্যপালের বিরুদ্ধে।

সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যার তরফে ওই রিট পিটিশন দায়ের করেন আইনজীবী আস্থা শর্মা। তিনি আদালতকে জানিয়েছেন রাজ্যপাল ওই বিলগুলি আটকে রেখে সংবিধানের ২০০ নম্বর বিধি ভঙ্গ করছেন। যা যেকোনও গণতন্ত্রে সুশাসনের বিরোধী এবং রাজ্যের জনকল্যাণের পরিপন্থী।

যে আটটি বিল রাজ্যপালের কাছে পড়ে রয়েছে, সেগুলি হল—

১। পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধনী) বিল। যা প্রণীত হয়েছিল ২০২২ সালের ১৩ জুন
২। পশ্চিমবঙ্গ পশু এবং মৎসবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল। প্রণীত হয়েছিল ২০২২ সালের ১৫ জুন
৩।পশ্চিমবঙ্গ বেসরকার বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল। যা প্রণীত হয়েছিল ২০২২ সালের ১৪ জুন ৪।পশ্চিমবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (দ্বিতীয় সংশোধনী) বিল। যা প্রণীত হয়েছিল ২০২২ সালের ১৭ জুন
৫।পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল। যা প্রণীত হয়েছিল ২০২২ সালের ২১ জুন
৬।পশ্চিমবঙ্গ আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন(সংশোধনী) বিল। যা প্রণীত হয়েছিল ২০২২ সালের ২৩ জুন
৭।পশ্চিমবঙ্গ নগর পরিকল্পনা এবং নগরোন্নয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল। যা প্রণীত হয়েছিল ২০২৩ সালের ২৮ জুলাই
৮।পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন(সংশোধনী) বিল। যা প্রণীত হয়েছিল ২০২৩ সালের ৪ অগস্ট

এর মধ্যে প্রথম ছ’টি আইন বিধানসভায় পাশ হয়েছিল জগদীপ ধনখড় বাংলার রাজ্যপাল থাকাকালীন। শেষ দু’টি বিল পাশ করা হয় রাজ্যপাল হিসাবে সিভি আনন্দ দায়িত্ব গ্রহণের পরে। আটটি বিলই আপাতত রাজভবনে আটকে রয়েছে বলে অভিযোগ নবান্নের।

পুরনো মামলার উদাহরণ টেনে এনে রাজ্য সরকারের আইনজীবী বলেছেন, এর আগে সরকার প্রণীত বিল আটকে রাখার জন্য দেশের শীর্ষ আদালত চার রাজ্যের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছিল। তেলঙ্গনা এবং পঞ্জাবের রাজ্যপালকে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল অবিলম্বে আটকে রাখা বিল ফেরত পাঠাতে। গত বছর তামিলনাড়ু এবং কেরলের রাজ্যপালেরও সমালোচনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট বিল আটকে রাখার জন্য। নবান্ন সেই সমস্ত উদাহরণ টেনে এনে রাজ্যপালের বোসের বিল আটকে রাখার বিষয়টি পেশ করেছে সুপ্রিম কোর্টে। জানিয়েছে, ২০২২ সাল থেকে ওই আটটি বিল পড়ে রয়েছে রাজভবনে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement