অর্জুন চক্রবর্তী, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ‘দেবী চৌধুরাণী’র শুটিংয়ে। ছবি: সংগৃহীত।
১৯৭৪-এর পর ২০২৪। মাঝে ৫০ বছরের ব্যবধান। দীনেন গুপ্তের ‘দেবী চৌধুরাণী’-র কথা এই প্রজন্ম সে ভাবে জানে ক’জন? তারা হয়তো শুভ্রজিৎ মিত্রের ‘দেবী চৌধুরাণী’কেই বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসের সঙ্গে মিলিয়ে দেখবেন। এই ছবিতে শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় নায়িকার ভূমিকায়। তাঁকে ‘প্রফুল্ল’ থেকে ইংরেজবিরোধী ‘দস্যুরানি’তে পরিণত করবেন ‘ভবানী পাঠক’। এই চরিত্রে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। এর আগে একাধিক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, এক বছর ধরে তিলে তিলে নিজেকে চরিত্রের উপযোগী করে গড়েছেন। ভারিক্কি দেখাতে ওজন বাড়িয়েছেন, গোঁফ-দাড়িও।
শুটিংয়ে প্রসেনজিৎ-শ্রাবন্তী। ছবি: সংগৃহীত।
১৯৭৪-এর ছবিতে এই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন বসন্ত চৌধুরী। প্রসেনজিৎ কি কোনও ভাবে তাঁকে অনুসরণ করলেন? জানতে চেয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। প্রযোজক-অভিনেতার কথায়, “ওঁকে অনুসরণ করব না বলে ছবিটাই আর দেখিনি। বদলে খুঁটিয়ে চিত্রনাট্য পড়েছি। একাধিক বার শুভ্রজিতের সঙ্গে আলোচনায় বসেছি।” তার পর নিজের মতো করে ‘ভবানী পাঠক’কে ক্যামেরার সামনে তুলে ধরেছেন। এই প্রসঙ্গে নিজের চরিত্র সম্বন্ধে অভিনেতা আরও জানান, “আমার চরিত্রটিই তো ইতিহাস। তা ছাড়া, পরিচালক কোনও ভাবে বঙ্কিমের উপন্যাসকে অনুসরণ করেননি।”
পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্রের সঙ্গে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব ছবি।
এ কথায় সায় দিয়েছেন পরিচালকও। শুভ্রজিৎ বলেছেন, “বুম্বাদার অধ্যবসায় দেখার মতো। শরীরচর্চার মধ্যে থাকেন বলে আলাদা করে ওঁকে শরীরচর্চার প্রশিক্ষণ নিতে হয়নি। বরং সবচেয়ে দ্রুত অস্ত্রচালনা শিখেছেন। অ্যাকশন দৃশ্যে ওঁর অভিনয় দেখে আমিই থ! ওঁর বয়সে আমি এলে আমিই পারব না! সব রকম সতর্কতা নিয়েই বিশাল বটগাছের উপর থেকে ঝাঁপ দিচ্ছেন।” আরও কিছু অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, প্রসেনজিৎ মেকআপ ভ্যানে যখন বিশ্রাম নিতেন তখনও তিনি অভিনীত ‘চরিত্র’। বাড়তি কথা নয়। হয় সংলাপ পড়ছেন, নয়তো চোখ বুজে অভিনয় নিয়ে ভাবছেন। সেটে আসার আগে মনোযোগী ছাত্রের মতো পরিচালককে প্রশ্ন করতেন, “রাজা, আজ কী ভাবে শুটিং করছিস?” শুভ্রজিতের বোঝানো মন দিয়ে শুনতেন। পরিচালকের মতে, ওঁর মস্তিষ্ক যেন কম্পিউটার। ওই যে গেঁথে যেত, আর ভুলতেন না। অনেক সময় আলোচনা করে শুটিংয়ের স্টাইল, অভিনয়ের ধারা নিজেদের মতো করে বদলে নিয়েছেন। পাশাপাশি, দলের প্রত্যেকে ওঁর সময়ানুবর্তিতার কাছে হেরে যেতেন। অভিনেতা বরাবর সকলের থেকে পাঁচ মিনিট এগিয়ে!