অনিল সহস্রবুদ্ধে
অনেক রাজ্যের সরকারই বিনামূল্যে জমি দিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিখরচায় জমি দিতে রাজি নয়। তাই এ রাজ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের হবু শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কেন্দ্র তৈরি করা যায়নি বলে কেন্দ্রীয় সরকারির তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে। তৃণমূল সরকার অবশ্য বলছে, রাজ্যের জমি-নীতি অনুযায়ী এই ধরনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ার জন্য জমি কিনে নেওয়ারই কথা।
রাজ্য যে বিনা পয়সায় জমি দিতে চাইছে না, রবিবার কলকাতায় সেই অভিযোগ তোলেন অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (এআইসিটিই)-এর চেয়ারম্যান অনিল সহস্রবুদ্ধে। ‘ইন হায়ার এডুকেশন: কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স, অ্যাক্রেডিটেশন অ্যান্ড র্যাঙ্কিং’ শীর্ষক আলোচনাসভার শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্বে সহস্রবুদ্ধে বলেন, ‘‘প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ার জন্য অনেক রাজ্যই যে বিনামূল্যে জমি দিয়েছে, তার কারণ, এ ক্ষেত্রে লাভবান হবেন সংশ্লিষ্ট রাজ্যের শিক্ষক ও পড়ুয়ারাই। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার বর্তমান বাজারদরে জমি কিনে নিতে বলেছিল। সেটা সম্ভব নয়। তাই এ রাজ্যে ওই কেন্দ্র গড়া যাচ্ছে না।’’
রেল থেকে সড়ক সম্প্রসারণ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্পে জমি নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের চাপান-উতোর দীর্ঘদিনের। তবে প্রযুক্তি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জমি নিয়ে এমন নালিশ নতুন বলেই অভিমত শিক্ষা শিবিরের একাংশের।
সহস্রবুদ্ধে জানান, ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে একাধিক বার কলকাতায় অন্তত এক একর জমি চাওয়া হয়েছিল। ছ’মাস আগেও জমির জন্য আবেদন করা হয়। রাজ্য জানায়, বাজারদরে জমি কিনতে হবে। কোন কোন রাজ্য নিখরচায় জমি দিয়েছে? সহস্রবুদ্ধের দাবি, গুজরাত, রাজস্থান, অসম বিনামূল্যে জমি দিয়েছে। তবে তিনি স্বীকার করেন, মহারাষ্ট্র ও তেলঙ্গানা জমি দেয়নি।
এর আগে বণিকসভার বিভিন্ন মঞ্চে শিল্পের জন্য এক লপ্তে জমি পাওয়া নিয়ে সমস্যার প্রসঙ্গ উঠেছে। শিল্পপতিদের একাংশের অভিযোগ, এ রাজ্যে মালিকের কাছ থেকে এক লপ্তে ১০০ বা ২০০ একর জমি সরাসরি কেনা সময়সাপেক্ষ এবং সেটা রীতিমতো ঝক্কির বিষয়।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, রাজ্যের নিজস্ব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। ওঁরা যদি আরও ইনস্টিটিউট তৈরি করে প্রশিক্ষণ দিতে চান, তার ব্যবস্থা ওঁদেরই করতে হবে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্য বিনা পয়সায় জমি দিতে অপারগ। ওই কেন্দ্রের জন্য নিখরচায় জমি দিলে বিভিন্ন ইনস্টিটিউট এসে জমি চাইবে। সকলকে কি তেমন ব্যবস্থা করে দেওয়া সম্ভব?’’ মন্ত্রীর বক্তব্য, মনে রাখতে হবে, জমি ও জনসংখ্যার ঘনত্বের নিরিখে অন্যান্য রাজ্য ও বাংলার অবস্থা এক নয়।