গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
জীবনবিমা এবং স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়াম থেকে জিএসটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠি পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘‘নতুন কর কাঠামোর অন্তর্গত আয়কর আইনের ৮০সি এবং ৮০ডি ধারা অনুযায়ী জীবনবিমা ও স্বাস্থ্যবিমার উপর ১৮ শতাংশ জিএসটি দিতে হয়। এই ব্যবস্থা জনবিরোধী।’’
জীবনবিমা এবং স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়ামে জিএসটির এই ব্যবস্থা তাঁকে ‘গভীর ভাবে যন্ত্রণা’ দেয় জানিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, জীবনবিমা এবং স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল মানুষকে আর্থিক নিরাপত্তা দেওয়া। অসুস্থতা, দুর্ঘটনা, মৃত্যুর মতো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির শিকার হওয়া ব্যক্তির পরিবারের সাহায্যে এ ধরনের বিমার গুরুত্ব অপরিসীম। তাই নীতিগত ভাবে এ ধরনের বিমার প্রিমিয়াম থেকে কর আদায় করা উচিত নয়।
প্রসঙ্গত, বর্তমান কর কাঠামোয় জীবনবিমা এবং স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়ামে ১৮ শতাংশ জিএসটি দেওয়ার যে বন্দোবস্ত রয়েছে তা প্রত্যাহারের সুপারিশ করে গত রবিবার (২৮ জুলাই) কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলাকে চিঠি লিখেছিলেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, জীবন এবং স্বাস্থ্যবিমায় ১৮ শতাংশ জিএসটি এক দিকে যেমন বিমাক্ষেত্রকে সঙ্কুচিত করছে, তেমনই প্রবীণ নাগরিকদের সমস্যার মুখে ফেলছে। গড়কড়ী এ-ও উল্লেখ করেছেন, জীবন এবং স্বাস্থ্যবিমা—দু’টি ক্ষেত্রই স্পর্শকাতর। এ দু’টির ক্ষেত্রে কর কাঠামো পুনর্গঠনের বিষয়টি বিবেচনা করা প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার জীবন এবং স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়াম থেকে জিএসটি প্রত্যাহার করার দাবি তোলেন তৃণমূলনেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘এই ক্ষেত্রে জিএসটি নেতিবাচক। তার কারণ, মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রেই বিরূপ প্রভাব ফেলছে।’’ মমতার কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার যদি এই জনবিরোধী জিএসটি প্রত্যাহার না করে তা হলে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হব।’’
বুধবার গডকড়ীর চিঠি প্রকাশ্যে এলেও জানা গিয়েছে, গত ২৮ জুলাই নির্মলাকে সেই চিঠি লিখেছিলেন তিনি। তবে সেই দিন তা জানাজানি হয়নি। উল্লেখ্য, ২৯ জুলাই সেই দাবিতেই রাজ্যসভায় সরব হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলে। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভার অধিবেশনে বিষয়টি উত্থাপন করেন তৃণমূলের আর এত সাংসদ দোলা সেন। দোলা সরাসরি গডকড়ীকে সমর্থন করে বলেছিলেন, ‘‘আমি গড়করীর প্রস্তাবকে সমর্থন করি। হয় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তা মানুন, না হলে পদত্যাগ করুন।’’