রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন নবান্ন। —ফাইল চিত্র।
শ্মশানে মৃতদেহ সৎকারে যাঁরা সাহায্য করেন, তাঁদের আর ডোম বলে ডাকা হবে না। তাঁরা নতুন নাম পাচ্ছেন। সরকারি খাতায় ডোমেদের এখন থেকে পরিচয় ‘সৎকারকর্মী’ হিসাবে। ওই নামেই তাঁদের উল্লেখ করা হবে সর্বত্র। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়েছে বুধবার। সেখানেই ডোম নিয়ে আলোচনা হয়। ডোমের নাম যে পরিবর্তন করা হবে, দীর্ঘ দিন ধরেই সে বিষয়ে আলোচনা চলছিল। এ বার তা বাস্তবায়িত হল।
করোনা ভাইরাসের বাড়বাড়ন্তের সময়ে যখন মুহুর্মুহু মানুষ মারা যাচ্ছিলেন, মৃত্যুমিছিল লেগেছিল শ্মশানের বাইরে, সেই সময়ে সৎকারকর্মীরা দিনরাত এক করে পরিশ্রম করেছেন। পরিস্থিতি এমন হয়েছিল যে, নতুন করে সৎকারের কাজে কর্মী নিয়োগ করতে হয়েছিল সরকারকে। শুধু বাংলা নয়, সারা দেশেই ওই সময়ে সৎকারকর্মীদের গুরুত্ব, চাহিদা অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছিল। কোভিডের সময় থেকেই সৎকারকর্মীদের ‘ডোম’ নামটি পরিবর্তন করা হবে বলে আলোচনা শুরু হয়েছিল।
পশ্চিমবঙ্গে সরকারি খাতায় এ বার থেকে মৃতদেহ সৎকারে সাহায্যকারীরা সৎকারকর্মী হিসাবে পরিচিত হবেন। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
এর আগে বাংলায় আরও এক বার ডোমেদের নাম পরিবর্তন করা হয়েছিল। মর্গে যাঁরা কাজ করেন, শবদেহ যাঁরা কাটাছেঁড়া করেন, তাঁদের নাম বদলে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। বাম আমলে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ওই মর্গের কর্মীদের নাম দিয়েছিলেন ‘শবব্যবচ্ছেদকর্মী’। ওই সময়ে প্রতি দফতরে কর্মীদের বাংলা নামকরণ করেছিল সরকার। মর্গের কর্মীদের নামকরণও ছিল তারই অঙ্গ। এ বার শ্মশানের ডোমের নামও পরিবর্তন করল রাজ্য সরকার। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত, সৎকারকর্মীদের কথা বোঝাতে ‘ডোম’ শব্দটি আর কোথাও ব্যবহৃত হবে না।