(বাঁ দিক থেকে) নরেন্দ্র মোদী, সুকান্ত মজুমদার এবং শুভেন্দু অধিকারী। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রচারের অন্যতম বড় অস্ত্র হতে চলেছে অযোধ্যায় রামমন্দির স্থাপন। সোমবার নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই তাই ময়দানে নেমে পড়ার নির্দেশ এসেছে কেন্দ্রীয় বিজেপির তরফে। ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে যাবে প্রচার কর্মসূচি। চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। আর ২২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে যখন নতুন মন্দিরের উদ্বোধন হবে তখনও অনেক পরিকল্পনা বিজেপির। গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু বাংলা নয়, গোটা দেশেই বিজেপি ওই দিনটি বিশেষ ভাবে পালন করবে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সেই নির্দেশ পাওয়ার পরে বাংলাতেও তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে।
এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে, তাতে ২২ জানুয়ারি রামমন্দিরের গর্ভগৃহে থাকবেন মাত্র পাঁচ জন। মোদীকে সঙ্গ দেবেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। থাকবেন রাজ্যের রাজ্যপাল তথা গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আনন্দীবেন পটেল এবং আরএসএসের সর-সঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। এ ছাড়া প্রধান পুরোহিত গর্ভগৃহে থাকবেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আট হাজার জনকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও রাজ্যস্তরের বিজেপি নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। বরং, সেই দিনটায় রাজ্যস্তরে কিছু কর্মসূচি নিতে বলা হয়েছে।
শুধু বিজেপি নয়, এই কর্মসূচি গোটা সঙ্ঘ পরিবারের। সকলে মিলেই বাংলায় ওই দিনটিকে ‘দীপাবলি’র চেহারা দিতে চান। বিজেপি নেতা, কর্মী তো বটেই দলের সমর্থক এবং সঙ্ঘের বিভিন্ন সংগঠনের অনুরাগীদের বাড়ি ওই দিন প্রদীপ জ্বালানো হবে। সেই সঙ্গে আলো দিয়ে সাজানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। সেই সঙ্গে বিজেপি নেতাদের বাড়তি দায়িত্ব রয়েছে। বাংলায় প্রতিটি জেলার প্রধান মন্দিরে ওই দিন বিশেষ পুজোর আয়োজন করতে বলা হয়েছে। সেখানে প্রদীপ জ্বালিয়ে রামমন্দির উদ্বোধনের উৎসব পালন করতে হবে। গ্রামে, গ্রামে যত মন্দির রয়েছে সেখানেও একই ভাবে ছোট করে হলেও উৎসব হবে। সর্বত্র, বড় পর্দায় অযোধ্যার অনুষ্ঠানে দেখানোর ব্যবস্থাও করতে হবে।
এই কাজ যাতে সহজ হয় তার জন্যই সোমবার থেকে পথে নামার ডাক দেওয়া হয়েছে। বাংলার বাড়ি বাড়ি অযোধ্যায় মন্দির তৈরির বার্তা পৌঁছে দিতে প্রচার পুস্তিকা নিয়ে যেতে হবে। উদ্বোধনের পরে সকল হিন্দু পরিবার যাতে অযোধ্যা ভ্রমণে যান এবং রামলালার দর্শন করেন সেই আমন্ত্রণও জানানো হবে। আর এই প্রচারের সময়েই প্রত্যেকের বাড়িতে প্রদীপ জ্বালানোর পাশাপাশি স্থানীয় যে কোনও দেবদেবীর মন্দিরে পুজো দেওয়ার কথা বলা হবে।
গত বুধবার রাজ্য বিজেপির বর্ধিত কার্যকারিণী বৈঠকে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা বলেন, ‘‘রাজ্যের পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে এই কর্মসূচির কথা সকলকে বলেন।’’ প্রসঙ্গত, ওই বৈঠকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ রাজ্য স্তরের সব নেতাই উপস্থিত ছিলেন। ডাকা হয়েছিল, সব মোর্চা ও শাখার রাজ্য নেতৃত্বকেও। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেন, ‘‘রামমন্দিরের জন্য লড়াই দীর্ঘ দিনের। ভারতের জাতীয় গৌরবের দিন হবে ২২ জানুয়ারি। সেই উৎসবে বাংলাও শামিল হবে। আর সারা দেশে এক সঙ্গে যে উৎসব হবে তা দেখে বিশ্ববাসী নতুন করে ভারতের সনাতন ঐক্যের পরিচয় পাবেন।’’