অর্জুন সিংহ বনাম সোমনাথ শ্যামের দ্বন্দ্ব থামার লক্ষণ নেই ব্যারাকপুরে। ফাইল চিত্র।
বৈঠক বানচালের পরদিনই আবারও সাংসদ অর্জুন সিংহকে আক্রমণ করলেন তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম। নাম না করে সাংসদের বিরুদ্ধে একাধিক তৃণমূল কর্মীর খুনের ঘটনা ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ করলেন। এ বার তাঁর সঙ্গী হয়ে সাংসদের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক সুবোধ অধিকারী। আর এমন ঘটনার পর ব্যারাকপুর তৃণমূলে অস্বস্তি বাড়ছেই।
রবিবার জগদ্দল বিধানসভার এক অনুষ্ঠানে নাম না করে অর্জুনকে নিশানা করেন সোমনাথ। তিনি বলেন, ‘‘যিনি আজ নিজেকে তৃণমূল বলে পরিচয় দিচ্ছেন, তিনি ২০১৯ সালে বিরোধিতা করে দল ছেড়েছিলেন কেন? কেনই বা দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন?’’ সোমনাথ আরও বলেন, ‘‘বিজেপিতে গিয়ে অনেক তৃণমূল কর্মী খুন করিয়েছিলেন। এখন আবার নিজের স্বার্থ দেখে তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। শুধু তৃণমূল কর্মীরাই খুন হচ্ছেন। অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মীরা খুন হচ্ছেন না। আর এই সব ঘটনার সঙ্গে কারা যুক্ত আমরা জানি, আমার কাছে হলুদ ফাইল রয়েছে। সেই ফাইলেই সব ঘটনার প্রমাণ রয়েছে।’’ তাঁর দাবি, এই হলুদ ফাইল ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দেবেন। তারপরেই প্রকৃত অপরাধী কে জানা যাবে।
একই অনুষ্ঠানে সোমনাথের বক্তব্যকে সমর্থন করে বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক সুবোধ বলেন, ‘‘২০২৪ সালে আবার তিনি কোন ডালে গিয়ে বসবেন, এখন সেটাই দেখার। আর আমি বলে দিতে চাই, সোমনাথ নামে শিব। শিবের মাথায় কিন্তু সবাইকে জল ঢালতেই হবে।’’ উল্লেখ্য, শনিবার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে তৃণমূলের সমস্যা মেটাতে বৈঠকে বসতে চেয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। ওইদিন বিকেলে সাংসদ অর্জুনকে নিয়ে তিনি নৈহাটি পুরসভা গিয়ে বিধায়ক সোমনাথের অপেক্ষায় বসেছিলেন। বেশকিছুটা দেরিতে পৌঁছান সেচমন্ত্রী তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। প্রায় ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট অপেক্ষার পরেও জগদ্দল ও বীজপুরের তৃণমূল বিধায়করা বৈঠকে যোগদান না করলে বেরিয়ে যান বক্সী।
বৈঠকে যোগদান না করা প্রসঙ্গে সোমনাথ বলেন, ‘‘এমন কোনও বৈঠক আছে বলে আমার জানা ছিল না। কোনও বৈঠকেও আমাকে ডাকা হয়নি। তাই আমি কোথাও যাইনি, এমনটা বলা উচিত নয়।’’ আর ঠিক সেই বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরদিনই একযোগে সোমনাথ-সুবোধ আক্রমণ শানালেন সাংসদ অর্জুনকে। যা দেখে ব্যারাকপুরের রাজনীতির কারবারিরা বলতে শুরু করেছেন, শাসকদলের অন্দরের পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।