রাজ্যের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে গেলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রের জন্য ১০০ দিনের টাকা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, অভিযোগ করেছিল রাজ্য। পাল্টা বিজেপি বলল, রাজ্য সরকার বাংলার মানুষকে কেন্দ্রীয় সুযোগ সুবিধা থকে বঞ্চিত করছে। বিজেপির দাবি, ওই কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রায় দেড় লক্ষ কর্ম সংস্থান থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন বাংলার গ্রামের মানুষ। মঙ্গলবার এই মর্মে কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করলেন বাংলায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
মঙ্গলবার সুকান্ত নিজেই এসেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টে। আদালতে তিনি বলেন, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকারের প্রকল্পের কথা যাতে বাংলার মানুষ জানতে পারেন, সে জন্য পঞ্চায়েত স্তরে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কমন সার্ভিস সেন্টার (সিএসসি) চালু করা হয়েছিল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্যের প্রায় ৪০ হাজার সিএসসি বন্ধ করে দিয়েছে। সুকান্তের অভিযোগ, বাংলার মানুষ যাতে কেন্দ্রীয় পরিষেবার কথা জানতে না পারেন, সে জন্যই ওই পদক্ষেপ করেছে রাজ্য।
মঙ্গলবার এই অভিযোগেই হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন সুকান্ত। তাঁর কথায়, সিএসসি-র মাধ্যমে পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে ই-সার্ভিস মারফৎ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা জানতে পারত গ্রামীণ মানুষ। ২০২০ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতার সরকার ওই পরিষেবা তুলে দেয়। পরিবর্তে ‘বাংলা সেবা কেন্দ্র’ নামে একটি সেন্টার খোলা হয়েছে। মামলায় সুকান্তের প্রশ্ন, কেন কেন্দ্রীয় ওই পরিষেবা বন্ধ করা হল?
কেন্দ্রীয় ওই পরিষেবা বন্ধ হওয়ায় অনেকে কাজ হারিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন সুকান্ত। তিনি বলেছেন, ‘‘রাজ্যের বিভিন্ন পঞ্চায়েত অফিসে কমপক্ষে দেড় লক্ষ ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেছে রাজ্য। তাই পঞ্চায়েত অফিসগুলিতে কেন্দ্রের ওই পরিষেবা আবার চালু করা হোক। প্রায় ২০০ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা নানা ভাবে পাক রাজ্যের মানুষ।’’
তবে সুকান্তের এই মামলায় রাজনীতির কারবারিরা পাল্টা রাজনীতির গন্ধও পাচ্ছেন। অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে যে ১০০ দিনে টাকা আটকে রাখার অভিযোগ করা হয়েছে, এটা কি তারই জবাব? লোকসভা ভোটের আগে এই অভিযোগকে মূল ইস্যু বানিয়ে দিল্লি যাওয়ার কথা জানিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। এমনও বলা হয়েছে, দরকারে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির সামনে ধর্নায় বসবেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দাবি জানাবেন আটকে রাখা ১০০ দিনের টাকা বাংলাকে দেওয়ার জন্য। এর মধ্যেই বাংলার বিজেপি খোদ তৃণমূলের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের কর্মসংস্থান আটকে রাখার পাল্টা অভিযোগ আনল। এ কি নেহাৎই কাকতালীয়?
মঙ্গলবার হাই কোর্টে সুকান্তের জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের হয়েছে। আগামী সপ্তাহে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানির সম্ভাবনাও রয়েছে বলে আদালতসূত্রে খবর।