BJP

পদ্মের ঘরে দুর্গা আসছেন, শেষ বারের পুজোয় চমক চান রাজ্য নেতৃত্ব, উমার আবাহনে ‘মাতৃ’ বন্দনাও

সুকান্ত এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘পুজো তো সকলের। সবাই মিলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এটা ভাবনা চিন্তা চলছে যাতে মাতৃ আরাধনায় কোনও মহিলা পুরোহিতকে দায়িত্ব দেওয়া যায়।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২১:১৫
Share:

প্রতীকী চিত্র।

ঠিক ছিল নমো-নমো করেই হবে বিজেপির দুর্গাপুজো। সেটাই হলেও অন্য চমক রাখতে চায় রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। ঠিক হয়েছে উমার আরাধনার সঙ্গে হবে মাতৃবন্দনাও। মূলত দলের মহিলা নেত্রীদের পুজোর দায়িত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ঠিক হয়েছে পুরোহিতও হবেন কোনও মহিলা। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এমন পরিকল্পনা স্বয়ং রাজ্য সভাপতির। তিনিই এমন ভাবনার কথা জানিয়ে নেতৃত্বকে পুজোর প্রস্তুতি শুরু করতে বলেছেন। সুকান্ত এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘পুজো তো সকলের। সবাই মিলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এটা ভাবনা চিন্তা চলছে যাতে মাতৃ আরাধনায় কোনও মহিলা পুরোহিতকে দায়িত্ব দেওয়া যায়।’’

Advertisement

গত বছর পুজোয় কলকাতার ৬৬ পল্লির শারদোৎসব কমিটি পুজোয় মহিলা পুরোহিত নিয়োগ করেছিল। তা নিয়ে কিছু বিতর্কও তৈরি হয়। তবে সেই পুজোর পিছনে ওই কমিটির প্রেরণা ছিল একটি চলচ্চিত্র। পরিচালক অরিত্র মুখোপাধ্যায়ের ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ ছবি দেখেই ভাবনা আসে। যোগাযোগ করা হয়েছিল, ছবিটির প্রযোজনা সংস্থা উইন্ডোজ প্রোডাকশনের সঙ্গে। তাঁদের থেকেই কর্তারা জানতে পারেন মহিলা পুরোহিতদের দল ‘শুভমস্তু’-র কথা। ‘শুভমস্তু’ দলটি চার জন মহিলা পুরোহিতকে নিয়ে তৈরি। নন্দিনী, রুমা, সেমন্তী ও পৌলমী রয়েছেন এই দলটিতে। আর এই দলের নন্দিনীর জীবন থেকেই তৈরি হয়েছে ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ ছবিটি।

তবে বিজেপির পুজোয় মহিলা পুরোহিতের ভাবনার পিছনে সে সব কিছু নেই। দলের সাংসদ তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের দলে মেয়েদের মাতৃরূপে দেখা হয়। নারী সশক্তিকরণ নরেন্দ্র মোদী সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। আর বাংলায় যে ভাবে রোজ রোজ মেয়েদের হেনস্থার মুখে পড়তে হয় সেখানে আমরা এমনটা ভেবেছি। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হলেও এটা ঠিক যে বিজেপির দুর্গাপুজো আশ্বিনের আর মাতৃপূজা বারো মাসের।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, কিছুটা ‘বাধ্যবাধকতা’ থেকেই এ বার দুর্গাপুজোয় উদ্যোগী হতে হচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে। হিন্দু লোকাচারে এমন রীতি চালু রয়েছে যে, কোনও ব্রত বা পুজো এক বার পালন করলে পর পর তিন বার করতে হয়। এটাকে ‘উদ্‌যাপন’ বলা হয়। সেই কারণে, হিন্দুত্বের রাজনীতি করা বিজেপি শিবির সেই রীতি ভাঙতে চাইছে না। তাই পুজো হলেও তা উৎসবের মেজাজে নয়, হবে উদ্‌যাপনের রীতি পালনের তাগিদে। সেই উদ্‌যাপনেরই নতুন অঙ্গ হতে পারে মহিলা পুরোহিত।

বিজেপির দুর্গাপুজো শুরু হয়েছিল ২০২০ সালে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য বিজেপিতে তখন কোনও কিছুতেই উৎসাহের অভাব ছিল না। ভার্চুয়াল মাধ্যমে সে বার পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে স্বপ্নপূরণ না হওয়া বিজেপি ২০২২ সালেই নমো-নমো করে পুজো সারে। সেটুকু হওয়া নিয়েও একটা সময় অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। অনেক বিতর্কও হয়। সব শেষে বিতর্ক চাপা দিতেই পুজো হয়। এ বার আর কোনও বিতর্ক তৈরি হওয়ার আগেই ঠিক হয়েছে পুজো হবে। তবে সুকান্ত আগেই জানিয়েছেন এ বারেই শেষ। বিধাননগরের পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্র (ইজেডসিসি)-তে শেষবারের মতো আসছেন পদ্মের উমা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement