সপ্তমীতে মহা ‘যোগ’।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ স্লোগান মেনে দলের নেতারা প্রকাশ্যে বিদেশি পণ্য সে ভাবে ব্যবহার করতেই পারেন না। তবে কে কেমন পোশাক পরবেন, তাতে মোদীর কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু কয়েক বছর আগে থেকে এক নতুন নীতি নিয়েছেন মোদী। দলীয় নেতাদের তো বটেই, কর্মীদের কাছেও তাঁর আর্জি সকলে যেন খাদির পোশাক পরেন। সারা বছর না হলেও বছরে অন্তত একটা দিন যেন সকলে খাদির পোশাক কেনার চেষ্টা করেন। সেই সঙ্গে বলা হয়, সব চেয়ে ভাল, যদি সেই পোশাক গাঁধীজির জন্মদিন ২ অক্টোবরে কেনা হয়।
এ বার সেই ২ অক্টোবর গাঁধীজয়ন্তী পড়েছে দুর্গাপুজোর সপ্তমীর দিন। বাংলায় যেমন দুর্গাপুজো, তেমন গোটা দেশেই তখন চলবে নবরাত্রি। আর সেই সময়ে গাঁধীজয়ন্তীতে চলবে বিজেপির বিশেষ কেনাকাটা। বাংলার নেতারাও ঠিক করেছেন, পুজোয় পরিবারের পোশাক আগে কেনা হয়ে গেলেও নিজেদেরটা কিনবেন ওই দিন। আবার যাঁরা পুজোয় সে ভাবে পোশাক কেনেন না, তাঁরাও দলীয় কর্মসূচি মেনে ওই দিন খাদির কিছু না কিছু কিনবেন। এই প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আমি তো সারা বছরই খাদির পোশাক পরি। সেগুলোর আবার বেশিটাই আমার কেনা নয়। আমায় অনেকে পোশাক উপহার দেন। আমি সেগুলো অন্যদের দিয়ে দিই। তবে গাঁধীজয়ন্তীর দিন প্রতিবার নিয়ম করে খাদি গ্রামোদ্যোগ ভবন থেকে কিছু না কিছু কিনি। দেশের যেখানেই থাকি না কেন, ঠিক সময় করে কিনতে চলে যাই।’’
বিজেপির এই কর্মসূচি জোর কদমে শুরু হয় ২০১৯ সালে। সে বার দিল্লির কনট প্লেসে খাদির যে ‘ফ্ল্যাগশিপ শোরুম’ রয়েছে। সেখানে সে বার শুধু ২ অক্টোবরেই ১ কোটি ২৭ লাখ টাকার পোশাক বিক্রি হয়েছিল। মূলত গ্রামীণ শিল্প এবং দেশীয় পোশাককে জনপ্রিয় করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতির জন্য সে ভাবে কেনাকাটা হয়নি। ২০২১ সালে গোটা দেশে ৭ কোটি বিজেপি কর্মী গাঁধীজয়ন্তীতে খাদির পোশাক কিনবে বলে সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা ডাক দিয়েছিলেন। সেই লক্ষ্যপূরণ হয়েছিল বলে পরে বিজেপির পক্ষে দাবি করা হয়।
গত বছর এই সময়ে নতুন রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মতো তিনিও বাংলার নেতাদের সেই বার্তা দিয়েছিলেন। নিজেও কিনেছিলেন। ঠিক হয়েছিল রাজ্য স্তরের কোন নেতা কোন খাদির দোকানে যাবেন। এ বারের সূচি এখন চূড়ান্ত না হলেও গাঁধীজয়ন্তীতে যে দলের নেতা, কর্মীরা খাদির পোশাক কিনবেন, তা ঠিক হয়ে রয়েছে। সুকান্ত বলেন, ‘‘এখনও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ আসেনি। তবে বারবার নির্দেশ আসার বিষয়ও নয় এটা। দলের নীতি মেনেই তো এই কেনাকাটা। তাই বাংলায় শুধু বিজেপির নেতা, কর্মীরাই নন, আমরা চাই দেশপ্রেমী মানুষেরা সকলেই এই কর্মসূচিতে অংশ নিন। নিজেদের সামর্থ এবং প্রয়োজন মতো কেনাকাটা করুন।’’