দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগদান। ফাইল চিত্র।
দলে ‘অনুপ্রবেশে’ লাগাম দিতে সক্রিয় হল রাজ্য বিজেপি। রাজ্য নেতৃত্বকে এড়িয়ে দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগদান বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলের অন্দরে। যাকে কার্যত মুকুল রায়ের প্রতি বার্তা হিসাবেই দেখছে দলের একাংশ।
লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে রাজ্য দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং মুকুলবাবুর হাত ধরে তৃণমূল এবং সিপিএম থেকে কয়েক জন জনপ্রতিনিধি দল বদল করেছেন। তাঁদের মধ্যে লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলামকে বিজেপিতে নেওয়ায় দলের অন্দরে বিদ্রোহ হয়েছে। যার জেরে বিজেপির কর্মসূচিতে যোগ দিতে নিষেধ করা হয়েছে মনিরুলকে। হালিশহর এবং কাঁচরাপাড়া পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলররা দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন, তাঁদের সিংহভাগই ফিরে গিয়েছেন তৃণমূলে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের তিন তৃণমূল সদস্যও দিল্লিতে বিজেপিতে যোগ দিয়ে রাজ্যে ফিরে ফের পুরনো দলে চলে গিয়েছেন। বিজেপি সূত্রের খবর, এই তিনটি ঘটনার প্রেক্ষিতে দলের অন্দরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, রাজ্য নেতৃত্বকে অন্ধকারে রেখে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে কাউকে দলে নিলে পরিণতি ভাল হয় না। কারণ, সে ক্ষেত্রে যাঁরা দলে ঢুকছেন, তাঁদের সম্পর্কে বিশদ তথ্য আগে থেকে যাচাই করে নেওয়ার সুযোগ রাজ্য নেতৃত্বের থাকছে না।
রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দলে যাঁরা নতুন যোগ দিচ্ছেন, স্থানীয় নেতৃত্বকে এড়িয়ে তাঁরা রাজনীতি বা সংগঠন করতে পারবেন না।’’ আর মুকুলবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘দল কোনও সিদ্ধান্ত নিলে তা মেনেই কাজ করতে হবে। তার বাইরে গিয়ে কিছু করার প্রশ্ন নেই।’’
বিজেপি সূত্রের ব্যাখ্যা, পর পর কিছু ঘটনায় দলের মুখ পোড়ার পরে দলের ভিতরে বলে দেওয়া হয়েছে, যাঁরা রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ না করে দিল্লিতে গিয়ে যোগদান করছেন, তাঁদের দিল্লিতেই রাজনীতি করতে হবে। এ রাজ্যে তাঁদের কোনও রাজনৈতিক কাজ থাকবে না। আগামী বিধানসভা ভোটে তাঁদের প্রার্থী হওয়ার স্বপ্নও পূরণ না হতে পারে। এ রাজ্যে রাজনীতি করতে চাইলে দলের সাংগঠনিক রীতি মেনে রাজ্য নেতৃত্বের অধীনে কাজ করতে হবে।
আগামী ১০ অগস্ট বিজেপির রাজ্য কমিটির বৈঠক। দলের সর্বভারতীয় কার্যকরী সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডার সেখানে থাকার কথা। ওই দিন বেলুড় মঠ, স্বামী বিবেকানন্দ এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বাড়িও যাওয়ার কথা তাঁর। অগস্টের শেষে কলকাতায় জনসভা করার কথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের।