Khela Habe

‘খেলা হবে’! পড়শি দেশ থেকে মেলা শব্দবন্ধ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজ্যভোটের ময়দানে

চিরাচরিত পথে হাঁটা স্লোগান নয়। এই শব্দবন্ধের মাধ্যমে ছুড়ে দেওয়া ‘চ্যালেঞ্জ’ বাংলার রাজনীতিতে সব পক্ষকে তাতিয়ে তুলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:৪২
Share:

চিরঞ্জিতের সঙ্গে ব্যাডমিন্টন কোর্ট থেকে এই ছবিই পোস্ট করেছেন কাকলি। ছবি: কাকলির টুইটার হ্যান্ডল থেকে সংগৃহীত।

ছোট্ট দুটো শব্দ। আর তাতেই আপাতত মজে ময়দান। তবে খেলার ময়দান নয়, এ মাঠ রাজনীতির। আর সেখানেই সর্বদা শোনা যাচ্ছে আওয়াজ— ‘খেলা হবে’।

Advertisement

চিরাচরিত পথে হাঁটা স্লোগান নয়। অথচ এই শব্দবন্ধের মাধ্যমে ছুড়ে দেওয়া ‘চ্যালেঞ্জ’ বাংলার রাজনীতিতে একুশের ভোটের আগে সব পক্ষকে তাতিয়ে তুলছে।

কখনও শুভেন্দু অধিকারী, কখনও অনুব্রত মণ্ডল, সম্প্রতি ‘উত্তীর্ণ’ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ডাক দিয়েছেন ‘হোক না একটা খেলা’। শনিবার কুলপিতে যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘মাঠে নেমে খেলব’ বলেছেন। ‘দুর্গার পূর্বপুরুষ’ মন্তব্যে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে আক্রমণ করতে গিয়ে তিনি ওই শব্দবন্ধকেই হাতিয়ার করেছেন। বারাসতের বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে ব্যাডমিন্টন খেলার একটা ছবি টুইট করে বারাসতেরই সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারও লিখেছেন, ‘খেলা হবে’। আক্রমণের লক্ষ্য সেই দিলীপ।

Advertisement

শনিবার নিজের টুইটার হ্যান্ডলে অভিনেতা-বিধায়ক চিরঞ্জিতের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করেন কাকলি। সেই ছবিতে দেখা যায়, র‍্যাকেট হাতে ব্যাটমিন্টন কোর্টে চিরঞ্জিৎ-কাকলি। ছবিটি পোস্ট করে কাকলি লেখেন, ‘খেলা হবে। বলে বলে আউট হবে’। সঙ্গে হ্যাশট্যাগ দিয়ে বিজেপি দুর্গাকে অপমান করেছে বলেও লেখেন কাকলি। নিজের পোস্টে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক, ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং দলের টুইটার হ্যান্ডলকে ট্যাগও করেন তিনি।

নেহাত ‘খেলাচ্ছলে’ যে কাকলি ওই মন্তব্য করেননি, তা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবে কোথায় ব্যাডমিন্টন খেলতে গিয়ে হঠাৎ ‘খেলা হবে’ মনে হল, তা জানতে চাইলে আনন্দবাজার ডিজিটালকে কাকলি বলেন, ‘‘পুরসভার উদ্যোগে, বিধায়ক এবং সাংসদ তহবিলের টাকায় তৈরি একটি ইনডোর স্টেডিয়ামের উদ্বোধন হয়েছে আজ বারাসতে। বিধায়ক চিরঞ্জিত এবং আমি দু’জনেই সেখানে ছিলাম। আমি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। কেন ওই স্লোগান ওই কথা লিখেছি, তার অর্থ নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন!’’

বিগত ৫-৬ বছরে ভোটের ময়দানে স্লোগান যুদ্ধের যে আমদানি ঘটেছে, তা আগে এত ব্যাপক আকারে কখনও দেখা যায়নি। ‘হয় এ বার, নয় নেভার’, ‘উল্টে দেখুন পাল্টে গেছে’, ‘অব কি বার মোদী সরকার’, ‘উজ্জ্বল ভারত’, ‘বদলা নয় বদল চাই’-এর মতো স্লোগান গত কয়েক বছরে মুখে মুখে ফিরেছে সাধারণ মানুষের। তবে একটি স্লোগান নিয়ে সব দলের মধ্যে এমন কাড়াকাড়ি আগে কখনও দেখা যায়নি।

তবে যে শব্দবন্ধ নিয়ে এত উদ্দীপনা তার ‘কপিরাইট’ আদতে পড়শি দেশের এক রাজনীতিকের দখলে। শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগের নেতা তথা বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের বিধায়ক শামিম ওসমানই প্রথম ‘খেলা হবে’ শব্দবন্ধ জনপ্রিয় করে তোলেন। এ পার বাংলায় খাতায় কলমে পদ্মশিবিরে যোগদানের পর নন্দীগ্রামে প্রথম সভাটি করতে গিয়ে সেটি ধার নেন শুভেন্দু অধিকারী। নুন-ঝাল দিয়ে সেটি আরও মাখিয়ে নেন বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। শুভেন্দুর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘‘খেলা হবে, ভয়ঙ্কর খেলা হবে।’’ তার পর থেকেই এই দুই শব্দ নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। গেরুয়া শিবিরের একাধিক মিছিলে, বাম-কংগ্রেসের যৌথ মিছিলে নিয়মিত শোনা যাচ্ছে ‘খেলা হবে’। শনিবার মঙ্গলকোটে ডিজে ডেকে এনে রীতিমতো এই শব্দবন্ধ নিয়ে গান বাঁধা হয়। অনুব্রত নিজে তাতে গলা মেলান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement