গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর ২৪ ঘণ্টাও অপেক্ষা করলেন না রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্ধ্যা গড়ানোর আগেই তৃণমূলের সদস্যপদ ছাড়লেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইতিমধ্যেই নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। পদত্যাগপত্রের একটি কপি পাঠিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকেও। চিঠি পৌঁছে গিয়েছে তৃণমূল ভবনেও। তাতে তিনি জানিয়েছেন, নিজের সদস্যপদের পাশাপাশি দলের সমস্ত দায়িত্বও ছাড়লেন তিনি। এই মুহূর্ত থেকে দলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করলেন বলেও চিঠিতে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন রাজীব।
দীর্ঘ দিন ধরেই দলের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন রাজীব। দলে থেকে কাজ করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করছিলেন। গত ২২ জানুয়ারি প্রথম বনমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন রাজীব। তার এক সপ্তাহের মাথায় শুক্রবার বিধায়ক পদ ছাড়েন তিনি। বিধানসভায় গিয়ে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে বসে পদত্যাগপত্র লেখেন। তবে তৃণমূলের সদস্যপদ ছাড়া নিয়ে তখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি তিনি। বরং একটা দিন সময় নিয়ে শনিবার পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপের কথা জানাবেন বলে সকলকে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু তার পর সন্ধ্যা গড়ানোর আগেই দল ছেড়ে বেরিয়ে এলেন তিনি।
ঘটনাচক্রে শুক্রবার রাতেই কলকাতায় পা রাখছেন অমিত শাহ। তাই রাজীবের বিজেপি-তে যোগদানের জল্পনা আরও জোর পেয়েছে। শোনা যাচ্ছে, রবিবার শাহের উপস্থিতিতে ডুমুরজলায় তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে হাতে পদ্ম তুলে নেবেন। শাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন কি না, তা নিয়েও এখনও পর্যন্ত টুঁ শব্দটিও করেননি রাজীব। তবে তৃণমূল ছেড়ে যে অন্য দলে যাওয়ার যে পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর, এ দিন নিজেই তেমন ইঙ্গিত দেন তিনি। বিধানসভা থেকে বেরিয়ে বলেন, ‘‘সংসদীয় গণতন্ত্রে রাজনীতির কাজ করতে গেলে কোনও না কোনও দলের অংশ হতে হয় । নির্দল হয়ে সে ভাবে মানুষের জন্য কাজ করা যায় না।’’
তবে এই মুহূর্তে রাজীবকে গুরুত্ব দিতে রাজি নন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা চলে যাচ্ছেন, তাঁদের নিয়ে ভাবতে আগ্রহী নয় দল। যাঁরা আছেন তাঁদের নিয়ে ভাবতে রাজি আমরা।’’
দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘যাঁরা যাচ্ছেন, তাঁদের সকলকে একটাই অনুরোধ, তাঁরা যেন ওই বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই ভোটে লড়েন। হাওড়ার যে সব নেতারা আজ আওয়াজ তুলছেন, তাঁরা ২০১১-র পর দলে এসেছেন। জানাই ছিল রাজীব যাচ্ছেন। গোয়েন্দা কাহিনীর কিছু চরিত্রে ওঁরা অভিনয় করছিলেন। ভোটের মুখে দল ছাড়ছেন, মানুষ বিচার করবেন।’’