হুটমুড়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
মাওবাদীদের চেয়েও অনেক বেশি ভয়ঙ্কর বিজেপি। অজগর, কেউটের চেয়েও বেশি বিষধর। পুরুলিয়ার জনসভা থেকে এ ভাবেই বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘মাওবাদীরা তো অস্ত্র ফেলে মূল স্রোতে ফিরেছেন। আমরা তাঁদের চাকরি দিয়েছি। যাঁরা পাননি তাঁরাও পাবেন। কিন্তু বিজেপি মাওবাদীদের চেয়েও ভয়ঙ্কর। বাঁশ হয়ে ঢুকবে, ফালি হয়ে বেরোবে। অজগর, কেউটে, কোবরা নয়, সবচেয়ে বিষধক বিজেপি। এক ছোবলেই শেষ। ধরে, গিলে খেয়ে, হজম করে পালাবে।’’
শুধু ভোটের সময় বিজেপি-র বাংলাকে মনে পড়ে বলেও অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘কখনও বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙে, কখনও রবীন্দ্রনাথের। ভোটের সময়ই শুধু বাংলার কথা মনে পড়ে বিজেপি-র। অথচ বাংলাটাও ঠিক করে বলতে পারে না। বলে বঙ্গাল। মুখে বঙ্গাল, বিজেপি ভোটের জন্য কাঙ্গাল।’’
বঙ্গ সফরে এসে দরিদ্র মানুষের বাড়ি খেতে যাওয়া নিয়েও বিজেপি নেতৃত্বকে একহাত নেন মমতা। তাঁদের ‘খাওয়ার ধার’ তৃণমূলকে শুধতে হয় বলেও দাবি করেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘গরিব মানুষের বাড়িতে খাওয়ার নাটক করছে। দলিতদের সরিয়ে দিয়ে তাদেরই বাড়িতে পাত পেড়ে খাচ্ছে বলে প্রচার করছে। আসলে পাঁচতারা হোটেল থেকে খাবার আনিয়ে কাঁসার থালায় সাজিয়ে খায়। পাশে থাকে বোতলে হিমালয়ের মিনারেল ওয়াটার। আমরা কিন্তু রাজ্য সরকারের ছ’টাকা দামের প্রাণধারাই খাই। খেতে আসার আগে বলে, খরচ দেব। কিন্তু খেয়ে টাকা না দিয়েই পগার পার। দলের কর্মীদের আমি বলেছি। গরিব মানুষদের টাকাটা না হয় আমরাই দিয়ে দিই। দরকার পড়লে নিজেদের মাইনে থেকে ওদের খাওয়ার টাকা মিটয়ে দেব আমরা।’’
নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সহযোদ্ধা, অধুনা দলত্যাগী শুভেন্দু অধিকারীর গড়ে গিয়ে সোমবারই সেখান থেকে ভোটে লড়ার জল্পনা উস্কে দিয়েছিলেন মমতা। এ দিন নাম না করে ফের একবার শুভেন্দুকে লোভী এবং ভোগী বলে কটাক্ষ করেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘ রাজনীতিতে তিন ধরনের লোক থাকে, লোভী, ভোগী আর ত্যাগী। আপনারা হলেন ত্যাগী। ত্যাগীদের বাড়িতে গিয়েই এ বার ভোট চাইছে ভোগীরা। কিছু লোভী, ভোগী দল ছেড়ে চলে গিয়েছে। তাতে ভালই হয়েছে। ত্যাগীরা কিন্তু শত প্রলোভনেও মায়ের কোল ছাড়ে না।’’