ছবি: সংগৃহীত।
অক্টোবরেই দেশকে ‘উন্মুক্ত শৌচ মুক্ত’ ঘোষণা করে প্রশ্নের মুখে পড়েছে কেন্দ্র। কারণ, বিভিন্ন রাজ্যের বাস্তব চিত্র সেই ঘোষণা বা সেই দাবির সঙ্গে আদৌ মিলছে না বলে জানাচ্ছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা। রাজ্যগুলির পরিস্থিতি বুঝতে মাঠে নেমেছে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক।
পশ্চিমবঙ্গেও ‘স্বচ্ছতার’ অগ্রগতি বুঝতে চায় কেন্দ্র। আজ, সোমবার কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের সচিব দুর্গাশঙ্কর মিশ্রের রাজ্যে আসার কথা। সঙ্গে থাকবেন মন্ত্রকের যুগ্মসচিব তথা স্বচ্ছ ভারত মিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিনোদকুমার জিন্দল। কাল, মঙ্গলবার রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কর্তা এবং পদস্থ অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন দুর্গাশঙ্কর। পুরকর্তারা ছাড়াও ওই বৈঠকে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের হাজির থাকার কথা।
কেন্দ্রীয় সরকারের বিচারে স্বচ্ছ ভারত মিশন বা মিশন নির্মল বাংলা নিয়ে বঙ্গের বিভিন্ন পুরসভা যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে। ৪২টি পুরসভা এ ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে আছে। ওই সব পুরসভা এলাকায় উন্মুক্ত শৌচালয় রয়েছে বা খোলা মাঠে শৌচকর্মের অভ্যাস রয়েছে বাসিন্দাদের একাংশের। পরিস্থিতির বদল ঘটাতে কিছু পদক্ষেপ করেছে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। ইতিমধ্যে ওই সব পুরসভায় বাড়তি নজরদারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ৪২টি পুরসভায় মাইক্রো প্ল্যানিং এজেন্সিকেও ব্যবহার করা হচ্ছে। নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে নিয়মিত পরিদর্শনও চলছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে পরিস্থিতির বদল ঘটবে বলে আশা করছেন রাজ্যের পুরকর্তারা। কেন্দ্রের মাপকাঠি অনুযায়ী রাজ্যের ৪২টি পুরসভা ‘উন্মুক্ত শৌচ মুক্ত’ হতে পারেনি। এই বিষয়ে চেয়ারম্যানদের কাছে আবেদনও করতে পারেন দুর্গাশঙ্কর।
আরও পড়ুন: মূল্যায়নের চিঠি ঘিরে ছাঁটাইয়ের ভয় রেলে
রাজ্যে স্বচ্ছ ভারত মিশন বা মিশন নির্মল বাংলার পরিস্থিতি কী, কোথায় অসুবিধা রয়েছে, কী ভাবে সেই সব অসুবিধা কাটিয়ে মিশনের আরও অগ্রগতি ঘটানো যায়— বৈঠকে এই সব বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। ওই বৈঠকে থাকার জন্য আমন্ত্রণ পৌঁছেছে রাজ্যের ১২৫টি পুর কর্তৃপক্ষের কাছে। আলোচনায় যোগ দেওয়ার কথা ওই সব পুরসভার মেয়র এবং চেয়ারম্যানদের। ওই তালিকায় রয়েছে বিরোধী দল পরিচালিত শিলিগুড়ি, জয়নগর-মজিলপুরের মতো পুরসভাও। বৈঠকের আমন্ত্রণ পৌঁছছে ভাটপাড়া পুরসভাতেও।
স্বচ্ছতা প্রকল্প নিয়ে এই সব উদ্যোগের মধ্যেই কেন্দ্রের কাছে পাওনাগণ্ডার হিসেব তুলে ধরতে চাইছে রাজ্য সরকার। স্বচ্ছ ভারত মিশন বা মিশন নির্মল বাংলা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বা সকলের জন্য বাড়ি-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছে অনেক টাকা পাওনা আছে রাজ্যের। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে কোথায় কতটা অসুবিধা হচ্ছে, বৈঠকে তা-ও তুলে ধরার প্রস্তুতি চালাচ্ছে রাজ্য। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্রও তৈরি করে ফেলেছে তারা।