বৃষ্টির জেরে ভোগান্তি চরমে। —নিজস্ব চিত্র
রাতভর এক নাগাড়ে ভারী থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের জেরে কার্যত জলবন্দি শহর কলকাতা। বিভিন্ন রাস্তায় জল জমে বিপত্তি দেখা দিয়েছে। ব্যাপক প্রভাব পড়েছে শহরের যান চলাচলের উপর। তার মধ্যেই কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গেই আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। ফলে ভোগান্তি আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঘূর্ণাবর্ত সক্রিয় হয়ে ওঠাতেই এই বৃষ্টি বলেও জানিয়েছে আলিপুর। তবে বেলার দিকে বৃষ্টি কিছুটা থামায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়। পথে নামেন মেয়র ফিরহাদ হাকিমও।
কখনও ভারী, কখনও অতি ভারী, কখনও বা মাঝারি। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয়েছে নাগাড়ে বর্ষণ। আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ লাগোয়া এলাকায় ঘূর্ণাবর্ত সক্রিয় রয়েছে। তার জেরেই এই বৃষ্টিপাত। রবিবার পর্যন্ত কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ জুড়েই এই ভারী বৃষ্টিপাত চলবে।
টানা বৃষ্টির জেরে বেহালার বিস্তীর্ণ এলাকা কার্যত জলের তলায়। ঠাকুরপুকুর, সখেরবাজার, শীলপাড়ার মতো এলাকায় অবস্থা ভয়াবহ। এ ছাড়া পার্ক স্ট্রিট, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি, পার্ক সার্কাসের মতো এলাকায় রাস্তায় জল জমেছে। রাস্তায় যানবাহন কম চলাচল করছে। বাসের সংখ্যাও কম। অটো, ট্যাক্সি দু’-একটি যা চলছে সেগুলি অতিরিক্ত ভাড়া হাঁকাচ্ছে। দমদম বিমানবন্দরের রানওয়ে এবং ট্যাক্সি ওয়েতেও জল জমেছে।
লাইভ আপডেট
• রবিবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে ভারী থেকে অতি ভারী বষ্টিপাত চলবে, পূর্বাভাস আলিপুর আবহাওয়া দফতরের
• ঘুর্ণাবর্ত সক্রিয় হয়ে ওঠায় এই বৃষ্টি, জানাল আলিপুর হাওয়া অফিস
• বৃষ্টির জেরে বেহালার শখের বাজার, ঠাকুরপুকুর, শীলপাড়া কার্যত জলের তলায়
• মেরামতির জন্য শিয়ালদহ ফ্লাইওভার বন্ধ
• বন্ধ রয়েছে যাদবপুর থানা থেকে বাইপাস কানেক্টরও বন্ধ মেরামতির কারণে
• তার সঙ্গে বিভিন্ন রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়ায় মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে
• সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের সাফারি পার্কের কাছে একটি গাছ উপড়ে পড়েছে
• তার জেরে ওই এলাকায় যান চলাচলে প্রভাব পড়েছে
• বিমানবন্দরের রানওয়ে এবং ট্যাক্সি ওয়েতে জল জমে যাওয়ায় উড়ানে দেরি হচ্ছে
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
কলকাতা পুরসভা ইতিমধ্যেই কন্ট্রোল রুম খুলেছে। যে সব জায়গায় জলমগ্ন হয়েছে, পাম্পের মাধ্যমে জল সরানোর চেষ্টা চলছে। তবে এক নাগাড়ে যেহেতু বৃষ্টিপাত হয়েই চলেছে, সেই জন্য দ্রুত জল নামানো যাচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন পুরসভার আধিকারিকরা। বৃষ্টি কিছুটা বিরতি দিলে পরিস্থিতি কিছুটা অবস্থার উন্নতি হতে পারে বলে আশা করছেন পুর ইঞ্জিনিয়াররা।
বেলার দিকে মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজে শহরের রাস্তায় নামেন। ঘুরে দেখেন বিভিন্ন এলাকার পরিস্থিতি। পাশাপাশি পুরসভার একাধিক পাম্পিং স্টেশন পরিদর্শন করে সেগুলি ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা, তা খতিয়ে দেখেন। পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘টানা ভারী বর্ষণের কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ঘণ্টা চারেক বৃষ্টি না হলেই প্রায় পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তবে বেহালা-সহ শহরের বেশ কিছু নীচু এলাকা থেকে জল নামতে সময় লাগবে।’’
বেহালার রাস্তায় হাঁটু জল। —নিজস্ব চিত্র
আরও পডু়ন: স্ত্রীর জন্মদিন পালন করতে ভিক্টোরিয়া এসেছিলেন সপরিবারে, বাজ পড়ে মৃত্যু সুবীরের
আরও পড়ুন: কার্ফু উঠছে, স্কুল খুলছে উপত্যকায়, নেট-মোবাইল বন্ধই
বৃষ্টির সঙ্গে দোসর হয়েছে শহরের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ফ্লাইওভার বন্ধ থাকায়। মেরামতির জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে শিয়ালদহ ফ্লাইওভার এবং জীবনানন্দ সেতু। তার জেরেও বাড়ছে যানজট।
(এই প্রতিবেদনে জলমগ্ন বেলুড় মঠের ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। ছবিটি পুরনো। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য দুঃখিত)