বুধবারেও কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গে শীত প্রায় নেই। উত্তুরে হাওয়া উধাও। ছবি: সংগৃহীত।
মকরসংক্রান্তির চরিত্র কি বদলাচ্ছে? পৌষের শেষ দিনে শীতের চরিত্র দেখে প্রশ্ন তুলছেন গাঙ্গেয় বঙ্গের বাসিন্দারা। বাঙালির কাছে পৌষসংক্রান্তি মানেই শীত, কনকনে উত্তুরে হাওয়া। কিন্তু গত কয়েক বছরে এই দিনে তেমন ঠান্ডা মেলেনি। বুধবারেও কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গে শীত প্রায় নেই। উত্তুরে হাওয়া উধাও। হাওয়া অফিস জানায়, মাঘের শুরুতেও শীত ঝিমিয়ে থাকতে পারে। চলতি সপ্তাহে কিছুটা বাড়তে পারে রাতের তাপমাত্রা।
আলিপুর হাওয়া অফিসের খবর, এ দিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম। কিন্তু কনকনে হাওয়া নেই। কিছু জেলায় তুলনায় শীত বেশি থাকলেও তা আহামরি নয়। ২০১২ এবং ২০১৭ সালে মকরসংক্রান্তির সময় জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েছিল কলকাতায়। পৌষের শেষ লগ্নে শীতলতম দিনের রেকর্ড হয়েছিল। যা দেখে অনেকেই বলছেন, পৌষের শেষেই জাঁকিয়ে শীত পড়ার কথা। তা হলে কি আগেভাগেই শীতের ইনিংস শেষ হয়ে যাচ্ছে?
কয়েক বছরের তথ্য দেখে এ ভাবে ঋতুর চরিত্র বদলে সিলমোহর বসাতে রাজি নন আবহবিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলছেন, শীতকালে সব সময় জোর ঠান্ডা থাকে না। পৌষের শেষেই সব সময় শীত পড়বে, এমন না-ও হতে পারে। অনেক সময়ই পশ্চিমি ঝঞ্ঝায় উত্তুরে হাওয়া বাধা পায়। এ বার তেমনটাই হয়েছে। আলিপুর হাওয়া অফিসের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, কাশ্মীরের উপরে একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝা (ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা, ভারী জোলো হাওয়া যা উত্তর ভারতের পাহাড়ে তুষারপাত ঘটায়) রয়েছে। তার ফলে উত্তুরে হাওয়া বাধা পাচ্ছে। বরং উত্তরপ্রদেশের পূর্ব দিক থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে হাওয়া বইছে। আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাড়তে পারে। চলতি সপ্তাহের শেষে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁতে পারে।
আরও পড়ুন: বিকল্প পায়নি দিল্লি, বিতর্ক সত্ত্বেও ফের সভাপতি হচ্ছেন দিলীপ ঘোষই
প্রবাদে আছে, মাঘে নাকি বাঘা শীত মেলে! সেই প্রবাদ তুলে অনেকে বলছেন, একেবারে বিদায় নেওয়ার আগে এক বার কি গা-ঝাড়া দেবে শীত? গণেশবাবু বলছেন, ঝঞ্ঝার প্রভাব কাটার পরে শীতের ভবিষ্যৎ বোঝা সম্ভব। আবহবিদেরা বলছেন, পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাবে কাশ্মীরে প্রবল তুষারপাত হলে এবং তার সঙ্গে শেষ বেলায় উত্তুরে হাওয়া জোরালো হলে একটু হলেও গা-ঝাড়া দিতে পারে।
শেষ বেলায় বাঙালির কাছে আপাতত আশ্বাস বলতে এটুকুই!