রবিবারের ঝড়ে লন্ডভন্ড জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। — নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গ জুড়ে ঝড়বৃষ্টি আরও কিছুটা স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আলিপুর হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস ঝড় এবং বৃষ্টি উংত্তরের পাঁচ জেলায় চলবে আরও অন্তত দু’দিন। সোমবারও জলপাইগুড়ি-সহ উত্তরের জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সেই সঙ্গে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়াও।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, সোমবার দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়াও বইতে পারে। একই পূর্বাভাস রয়েছে মঙ্গলবারের জন্যও। তবে মঙ্গলবার বৃষ্টির সম্ভাবনা কিছুটা কম। বুধবার থেকে উত্তরের জেলাগুলিতে আবার শুকনো আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। মালদহ, উত্তর দিনাজপুর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে সোম বা মঙ্গলবারও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।
সোমবার সকালে জলপাইগুড়ির আবহাওয়ার পরিস্থিতি মোটের উপর স্বাভাবিক রয়েছে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আকাশ সারা দিনই আংশিক মেঘলা থাকবে। তাপমাত্রা থাকতে পারে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। সোমবারও বিক্ষিপ্ত ভাবে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে জলপাইগুড়িতে।
দক্ষিণবঙ্গের ক্ষেত্রে আপাতত কোথাও বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিন দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে আবহাওয়া শুকনো থাকবে। সেই সঙ্গে বাড়তে পারে গরম। সোমবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে দুই ডিগ্রি বেশি। রবিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কলকাতায় আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম-সহ পশ্চিমের জেলাগুলিতে চলতি সপ্তাহেই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির গণ্ডি পেরিয়ে যেতে পারে। বাঁকুড়ায় আগামী ৬ এপ্রিলের মধ্যে তাপমাত্রা হতে পারে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
উত্তরবঙ্গে আগামী কয়েক দিন যে ঝড়বৃষ্টি হতে পারে, আগেই সে কথা জানিয়েছিল আলিপুর। রবিবার বিকেলে জলপাইগুড়িতে আচমকা ঝড় ওঠে। অনেকে তাকে ‘মিনি টর্নেডো’ বলছেন। চার মিনিটের ঝড়ে জলপাইগুড়ি শহর, ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে। পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা শতাধিক। ঝড়ে বহু গাছ উপড়ে গিয়েছে জলপাইগুড়িতে। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ। তাঁদের বাড়িঘর তছনছ হয়েছে ঝড়ের তাণ্ডবে। রাতেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জলপাইগুড়িতে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাত আড়াইটে পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেছেন। সকালে জলপাইগুড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এ ছাড়া সোমবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং তৃণমূল সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা।