বাংলার সব পরীক্ষার্থী একসঙ্গে অনলাইনে নাম নথিভুক্তির কাজ করতে পারবে না। ফাইল চিত্র।
অনলাইন ব্যবস্থায় অনেক জটের সুরাহা হলেও সার্ভার-বিভ্রাটে কাজকর্ম বিঘ্নিত হয় মাঝেমধ্যেই। এই অবস্থায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের রেজিস্ট্রেশন বা নাম নথিভুক্তির সময় ভাগাভাগি করে দেওয়া হয়েছে অনলাইনেও। সারা বাংলার সব পরীক্ষার্থী আর একসঙ্গে অনলাইনে নাম নথিভুক্তির কাজ করতে পারবে না। ওই কাজের সময় অত্যধিক চাপে সার্ভার যাতে বিগড়ে না-যায়, সেই জন্য নাম নথিভুক্তির সময় ও ‘জ়োন’ বাএলাকা ভাগ করে দিয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
বৃহস্পতিবার সংসদ জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গ, মেদিনীপুর ও বর্ধমানে সংসদের আঞ্চলিক অফিসের অধীন স্কুলের পড়ুয়াদের এ বার রাত ১২টা থেকে পরের দিন বেলা ৩টে পর্যন্ত অনলাইনে নাম নথিভুক্ত করতে হবে। কলকাতার অধীন স্কুলগুলির ছাত্রছাত্রীরা সেই কাজ করবে বেলা ৩টে থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত। নাম নথিভুক্তির কাজ দ্রুত করতেই এই সিদ্ধান্ত, জানিয়েছেন সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য।
এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় নেমেছে বেশ কিছু শিক্ষক ও শিক্ষক সংগঠন। তাঁদের অভিযোগ, স্কুলের নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে স্কুলের কাজ করতে হবে কেন? অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে কেন রাত ১২টায় বাড়িতে কাজে বসতে হবে? প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেসের রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি এবং শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীর প্রশ্ন, একে তো বিভিন্ন স্কুলে ডেটা এন্ট্রি অপারেটর না-থাকায় অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। সার্ভার ডাউন থাকায় সমস্যা আরও বেড়েছে। তার উপরে রাতে সার্ভার দ্রুত গতিতে চলবে, এই যুক্তিতে শিক্ষকদের রাত ১২টায় কাজ করতে বলা কতখানি যুক্তিযুক্ত?
সংসদ-প্রধান চিরঞ্জীব বলেন, “রাত ১২টায় তো কাজ করতে বলা হয়নি! রাত ১২টা থেকে পরের দিন বেলা ৩টে পর্যন্ত যে-কোনও সময়ে বসতে বলা হয়েছে। তিন হাজারের উপরে পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন একসঙ্গে আপলোড করতে গিয়ে সিস্টেম হ্যাং করে যাচ্ছে। তাই সময় ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।” চিরঞ্জীব জানান, সংসদের নিজস্ব সার্ভার নেই। রাজ্যের স্টেট ডেটা সেন্টার থেকে ভার্চুয়াল সার্ভার নিতে হয়েছে। ভার্চুয়াল মোডে যে-মেশিন চলছে, তার মেমারি কম। তাই একসঙ্গে একাধিক ফর্ম আপলোড করতে সমস্যা হচ্ছে। তবে সংসদ খুব দ্রুত নিজস্ব সার্ভার কিনে নেবে বলে জানিয়েছেন চিরঞ্জীব।
সংসদের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের শেষ তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বরের বদলে ১৭ অক্টোবর করা হয়েছে। ‘লেট ফাইন’ বা দেরির জরিমানা দিয়ে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত নাম নথিভুক্ত করা যাবে। রেজিস্ট্রেশনের ‘চেক-লিস্ট’ সংসদের আঞ্চলিক কার্যালয়ে জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বরের বদলে ৯ ডিসেম্বর করা হয়েছে। সংসদ জানিয়েছে, ২০২৩ সালের উচ্চ মাধ্যমিকে প্রশ্নের ধাঁচ হবে ২০১৯-এর মতো। সংসদ আগের বিজ্ঞপ্তিতেই জানিয়ে দিয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিকে এ বার ‘পার্ট এ’ ও ‘পার্ট বি’র জন্য একটি প্রশ্ন ও একটিই উত্তরপত্র থাকবে।