হুগলির বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। —ফাইল চিত্র।
দলের টিকিট বিলির পদ্ধতিকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন হুগলির বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। তাঁর অভিযোগ, প্রতীক দেওয়ার ক্ষেত্রে টাকার লেনদেন হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, দু’বছর আগে বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর জন্য পরিশ্রম করেছিলেন, এমন যাঁরা এই ভোটে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের জন্য তিনি লড়াই করবেন। তাঁরা তৃণমূলের প্রতীক না পেলেও, পাশে থাকবেন। অর্থাৎ, সে ক্ষেত্রে নিজের অনুগামী নির্দল বা ‘গোঁজ’ প্রার্থীর হয়েই ব্যাট ধরবেন বিধায়ক।
অর্থাৎ, উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের বিধায়ক করিম চৌধুরীর পথই অনুসরণ করছেন মনোরঞ্জন।
টিকিট বিলি নিয়ে অসন্তোষে বুধবার দলের দু’টি পদ ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন মনোরঞ্জন। জানান, রাজ্য সরকারের প্রাক্তন কর্মী হিসাবে গ্র্যাচুইটি এবং পেনশন পাচ্ছেন না। পেলে, বিধায়ক পদও ছাড়বেন।
বলাগড় ব্লকে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর ফাটল মনোরঞ্জনের ‘বিদ্রোহে’ বেড়েছে। এই ব্লকে তিনটি জেলা পরিষদ আসন রয়েছে। তার একটিতে তৃণমূলের প্রার্থী দলের প্রাক্তন বিধায়ক অসীম মাঝি। সেখানে মনোরঞ্জন ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল কর্মী ‘নির্দল’ হিসাবে রয়েছেন। দলের গোষ্ঠী সমীকরণে মনোরঞ্জন এবং অসীম বিপরীত মেরুতে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, ব্লকের ১৩টি পঞ্চায়েতের ২২৪টি আসনের মধ্যে ২৫টির বেশি আসনে তৃণমূলের ‘গোঁজ’ রয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির ৩৮টি আসনের মধ্যে এই সংখ্যা ৯। ‘গোঁজ’ প্রার্থী রয়েছে দলের দুই গোষ্ঠীরই। সংখ্যার হিসাবে বিধায়কের গোষ্ঠীর কম, ব্লক সভাপতি নবীন গঙ্গোপাধ্যায়ের বেশি।
নবীন বলেন, ‘‘কিছু নির্দল প্রার্থীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা লিফলেট ছড়িয়ে প্রচার করে দেবেন, নির্বাচনে লড়বেন না। আমাদের সঙ্গেই প্রচার করবেন।’’ মনোরঞ্জন আগেই বলেছিলেন, ‘‘আমাকে জেতানোর জন্য যাঁরা জীবন বাজি রেখে খেটেছেন, তাঁদের জন্য লড়ব। তাঁরা দলের টিকিট পেলেও লড়ব, না পেলেও।’’ বৃহস্পতিবার অবশ্য মনোরঞ্জনের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
বিজেপির রাজ্য নেতা স্বপন পাল বলেন, ‘‘বিধায়কের অভিযোগ ওদের দল খণ্ডন করতে পারছে না। বিধায়ক যে অবস্থান নিয়েছেন, সেটা হওয়ারই ছিল।’’ তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেন, ‘‘দল এখন নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত। তাই আবেদন করছি, দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ কেউ করবেন না। তবু যদি কেউ এই রকম কিছু করেন, তা হলে নিশ্চয়ই প্রত্যেকটি বিষয় আলাদা করে দেখা হবে। প্রয়োজন মতো ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’’