দিলীপ ঘোষ। ফাইল ছবি।
পঞ্চায়েত ভোটে দিলীপ ঘোষের গ্রামের একটি বুথে প্রার্থীই দিতে পারল না বিজেপি। ঘটনাচক্রে, যে বুথে গেরুয়া শিবির প্রার্থী দিতে পারেনি, সেই বুথেই ভোট দেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ। এ নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না শাসক তৃণমূল। তাদের বক্তব্য, সাধারণ মানুষ যে বিজেপির সঙ্গে নেই, তা এ থেকেই স্পষ্ট! এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘গত বছরেও ওখানে আমরা ৪০০-র বেশি ভোটে জিতেছিলাম। আমি অনেক দিন ওদিকে যাইনি। খোঁজ নিতে পারিনি। শুনলাম দল প্রার্থী দিতে পারেনি। খোঁজ নেব। অনেক এদিক-ওদিক হয়েছে।’’
দিলীপ ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরের কুলিয়ানা গ্রামের বাসিন্দা। কুলিয়ানা গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন সংখ্যা ১৩। এর মধ্যে কুলিয়ানা সংসদে দু’টি বুথ রয়েছে। সেই দু’টি বুথের মধ্যে ২৫ নম্বর বুথটি দিলীপের বুথ। সেখানেই ভোট দেন বিজেপি নেতা। সেই বুথে কেন প্রার্থী খুঁজে পাওয়া গেল না, তা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ জেলা নেতৃত্ব। ঘটনাচক্রে, কুলিয়ানার ১৩টি বুথের মধ্যে একমাত্র দিলীপের বুথ বাদ দিয়ে বাকি ১২টি বুথেই প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি।
২০১৩ সালে এই কুলিয়ানা গ্রামপঞ্চায়েত ছিল তৃণমূলের দখলে। তখন বিরোধী বলতে ছিল সিপিএম। ২০১৮ সালে ১০ আসনবিশিষ্ট এই পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। আট সদস্য বিজেপির, এক জন তৃণমূল আর এক জন নির্দল। সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন জিতে বোর্ড গঠন করেছিল বিজেপি। কিন্তু এই পঞ্চায়েত ভোটে সাংসদের নিজের গ্রামের বুথে দল প্রার্থী দিতে না পারায় তা এ নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করে চলেছে তৃণমূল। গোপীবল্লভপুর ২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি টিঙ্কু পাল বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষের নিজের বুথেই বিজেপি প্রার্থী দিতে পারেনি। এর থেকে তো স্পষ্ট বোঝা যায়, মানুষ বিজেপিকে বিশ্বাস করে না!’’
এর জন্য সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই দায়ী করেছেন ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম। তিনি বলেন, ‘‘জেলার সংগঠনের দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁরা বলেছিলেন, সব জায়গায় প্রার্থী বাছাই হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ওখানে দিলীপবাবুর বুথে যে প্রার্থী দেওয়া যায়নি, সেই বিষয় নিয়ে দলের কেউ আমাকে কিছু বলেননি। এটা পুরোটাই দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা। মনোনয়নের সময় জেলার সব ব্লক অফিসে গিয়েছিলাম। তখনও কেউ কিছু জানাননি।’’ দলীয় সাংসদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির সভাপতি তুফান মাহাতোর সঙ্গেও ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু যোগাযোগ স্থাপন হয়নি। তবে বিজেপির গোপীবল্লভপুরের মণ্ডল সভাপতি তাপস শুই বলেন, ‘‘একটি বুথ বাদ দিয়ে সব বুথেই প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। ওই বুথ এলাকায় কিছু সমস্যা রয়েছে। সেই কারণে প্রার্থী ঠিক করেও মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তবে এ বারেও বিজেপির দখলেই থাকবে গ্রাম পঞ্চায়েত। দিলীপ ঘোষকে সন্মান করি।’’