মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জগদীপ ধনখড়। ফাইল চিত্র।
নজিরবিহীন ভাবে চার পুরনিগমে ভোটের দিন জানালেও সোমবার ভোটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল না রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কারণ, হাওড়া নিয়ে টানাপড়েন। নবান্নের একটি সূত্র জানাচ্ছে, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সম্মতি পাওয়ার চেষ্টা চলছে। হাওড়া এবং বালি পুরসভাকে আলাদা করার বিলে রাজ্যপালের সই মিললে বিধাননগর শিলিগুড়ি, আসানসোল, চন্দননগরের পাশাপাশি আগামী ২২ জানুয়ারি ভোট হবে হাওড়া পুরনিগমেও।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকালে ভোটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতে পারে। কারণ, পুরসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ২৪ থেকে ২৭ দিন আগে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হয়। সেই বিধি অনুযায়ী ২২ জানুয়ারি ভোট করতে হলে মঙ্গলবারই তার চূড়ান্ত সময়সীমা।
সাধারণ ভাবে পঞ্চায়েত বা পুরসভার মতো স্থানীয় স্তরের নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেই মতো ভোটের নির্ঘন্ট বিস্তারিত ভাবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত রাজ্য বিজ্ঞপ্তি জারি না করা কারণ হিসেবে জানা যাচ্ছে, হাওড়া বিল নিয়ে শেষ মুহূর্তে রাজ্যপালের সঙ্গে যোগাযোগ করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টে পুরভোট সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে হাওড়া ও বালি পুরসভায় ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তার বিষয়টি ওঠে। এর পর বৃহস্পতিবার রাতেই রাজ্যপাল ওই বিলে সই করেন বলে শুক্রবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের বেঞ্চকে জানান রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়।
কিন্তু শুক্রবার বিকেলেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজভবনে ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে দাবি করেছিলেন, রাজ্যপাল তাঁকে বলেছেন, ওই বিলে তিনি সই করেননি। এর পর শনিবার রাজ্যপাল টুইটারে হাওড়া মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (সংশোধনী) বিল, ২০২১-এ সই না করার কথা জানিয়ে লেখেন, বিষয়টি এখনও তাঁর বিবেচনাধীন।
এই পরিস্থিতিতে সোমবার চার পুরনিগমের ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস জানান, মঙ্গলবারের মধ্যে রাজ্যপাল হাওড়া বিলে সই করলে আগামী ২২ জানুয়ারিই ভোট হতে পারে। ২৫ জানুয়ারি গণনাও হতে পারে অন্য চার পুরনিগমের সঙ্গেই। তিন জানান, হাওড়া নিয়ে রাজ্য কমিশনকে কিছু জানায়নি বলেই ভোটের ঘোষণা করা হল না।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে বালি পুরসভাকে হাওড়া পুরসভার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। তৈরি হয় হাওড়া পুরসভার নতুন ১৬টি ওয়ার্ড। ওই বছরের অক্টোবর মাসে ১৬টি আসনে উপনির্বাচন হয়। এর পর গত নভেম্বরে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে পাশ হয় হাওড়া ও বালি পুরসভাকে আলাদা করার ‘দ্য হাওড়া মিউনিসিপাল কর্পোরেশন (সংশোধনী) বিল ২০২১’। বিল বিধানসভায় পাশ হলেও রাজ্যপাল এত দিন ওই বিলে সই করেননি।