চঞ্চলের দাবি, “বিধানসভা ভোটে শহরের যে সব বুথে বিজেপি এগিয়ে ছিল, সেখানে আমাদের ভোটার করা হয়েছে। প্রার্থী এবং ব্লক নেতাদের আমাকে না চেনার কিছু নেই। ফের পঞ্চায়েত ভোটের সময় ভোটার কার্ড সংশোধন করে নেব।”
কাঁটাবনী আজাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাপ্পা ভোট দিচ্ছেন চঞ্চল (সাদা শার্ট)। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
কোনও রাখঢাক নেই। তিনি সরাসরিই দাবি করেছেন, রাজ্য পুলিশের পরিচালনায় পুরভোট হওয়ায় তাঁর সুবিধা হয়েছে। এক জামাতেই ৪০টি ভোট দিয়েছেন!
তিনি মির চঞ্চল। হুগলির আরামবাগের তিরোল পঞ্চায়েতের ৪ নম্বর বুথের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি। বিধানসভা ভোটের সময়েও ছিলেন তিরোল পঞ্চায়েত এলাকার ভোটার। সেখানকার নৈসরাই এলাকায় তাঁর বাড়ি। এ বার আরামবাগের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার হয়েছেন। রবিবার কাঁটাবনী আজাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে ভোটও দিলেন।
সকালে ভোটগ্রহণ পর্বের শুরু থেকেই আরামবাগে শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস এবং ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ তুলতে থাকেন বিরোধীরা। মির চঞ্চল বুথে ভোট দিতে ঢোকেন সকাল ৯টা নাগাদ। তারপর সেখানেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে বুথ দখল এবং ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ ওঠে।
ওই তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘আমি দলের সৈনিক। দলকে জিতিয়ে উন্নয়ন জারি রাখতে চাই। দল আমাকে যা নির্দেশ দিয়েছে, তা-ই করেছি।” গত বিধানসভা এবং লোকসভা ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাপট নিয়ে ক্ষোভও উগরে দেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা (কেন্দ্রীয় বাহিনী) থাকায় ১০ বার ভোট দিতে ১০টা জামা বদলাতে হয়েছিল। এ বার রাজ্য পুলিশের পরিচালনায় পুরভোটে এক জামাতেই প্রায় ৪০টা ভোট দিয়েছি।”
ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী সুকুর আলি অবশ্য মির চঞ্চলকে চেনেন না বলে দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘বিরোধী এজেন্টরা কেউ না থাকলেও সুষ্ঠু ভোটই হয়েছে। বুথ দখল বা ছাপ্পা ভোটের প্রশ্নই নেই।”
তৃণমূল প্রার্থীর দাবি মানছেন না বিরোধীরা। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী নবকুমার মালিক বলেন, “আমাদের এজেন্টকে বসতে দেয়নি ওরা। সম্পূর্ণ ছাপ্পা হয়েছে।” বিজেপি প্রার্থী শঙ্কর পাল বলেন, “সকালে এজেন্ট নিয়ে গিয়েছিলাম। এক বার ঢুকতে দিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে বের করে দেয়। সারাদিন ধরে ছাপ্পা দিয়েই বুথের ৯৫ শতাংশ ভোট হয়েছে।”
আগে পঞ্চায়েতের ভোটার হয়েও এ বার কেন পুরসভার ভোটার হলেন?
চঞ্চলের দাবি, “বিধানসভা ভোটে শহরের যে সব বুথে বিজেপি এগিয়ে ছিল, সেখানে আমাদের ভোটার করা হয়েছে। প্রার্থী এবং ব্লক নেতাদের আমাকে না চেনার কিছু নেই। ফের পঞ্চায়েত ভোটের সময় ভোটার কার্ড সংশোধন করে নেব।”
তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি রামেন্দু সিংহরায় বলেন, ‘‘কোথাও ছাপ্পা ভোট হয়েছে বা কেউ নিজের ভোট নিজে দিতে পারেননি বলে জানা নেই।’’