প্রতীকী ছবি।
বাংলার মনীষীদের উপর বাংলা ভাষায় লেখা বই রাজ্যের ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বিশেষ করে আইসিএসই এবং সিবিএসই-র পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার দুপুরে বিদ্যাসাগরের ২০১তম জন্মদিবস উপলক্ষে বিদ্যাসাগরের কলকাতার বাদুড়বাগানের বসতবাড়ির অনুষ্ঠানের প্রারম্ভিক বক্তৃতায় এ কথা জানান তিনি। তবে সশরীরে হাজির ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী, অনলাইনে বক্তব্য পেশ করেছেন। তাঁর এই ঘোষণার পরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, বাংলার মনীষীদের উপর লেখা বই দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গত বছর শিক্ষা দফতর ‘আমাদের বিদ্যাসাগর’ নামে যে বই প্রকাশ করেছিল সেই বইও রাজ্যের আইসিএসই এবং সিবিএসই বোর্ডের পড়ুয়াদের বিনামূল্যে দেওয়া হবে। তাঁর মতে, “আজকের প্রজন্মের বিশেষ করে ইংরেজি মাধ্যমের পড়ুয়ারা অনেকেই হয়তো বাংলায় থেকেও বাংলার মনীষীদের কথা বিস্তারিত ভাবে জানে না। তাই বই তাদের দেওয়া হবে।”
গত বছর ২৬ সেপ্টেম্বর রাজ্য সরকার এক বছর ধরে বিদ্যাসাগরের দ্বিশতবার্ষিকী পালনের কথা ঘোষণা করেছিল। এ দিন ছিল তার সমাপ্তি অনুষ্ঠান। গত বছর মুখ্যমন্ত্রী বিদ্যাসাগরের উপর কাজের জন্য যে কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন তার কয়েক জন সদস্যও সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, বাদুড়বাগানে বিদ্যাসাগর অ্যাকাডেমিতে তৈরি হবে গ্রন্থাগার, আর্কাইভ এবং সংগ্রহশালা। গ্রন্থাগারে বিদ্যাসাগরের লেখা বইয়ের পাশাপাশি বিদ্যাসাগরের উপরে লেখা বিভিন্ন লেখকের বইও থাকবে। আর্কাইভে থাকবে বিদ্যাসাগরের লেখা বিভিন্ন চিঠি ও নথিপত্র, এবং সংগ্রহশালায় থাকবে বিদ্যাসাগরের ব্যবহত নানা জিনিসপত্র। জাতীয় শিক্ষানীতিতে বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে না-রাখা নিয়েও সরব হন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “ঐতিহ্যময় বাংলা ভাষাকে এ ভাবে মুছে ফেলা যাবে না। রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র, মাইকেল মধুসুদন, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায়-সহ বহু বিশিষ্ট সাহিত্যিক যে ভাষায় লিখেছেন তাকে মুছে ফেলতে দেব না। বিদ্যাসাগরের জন্মদিনে বাংলার মেধাকে, বাংলার সংস্কৃতিকে বাঁচানোর জন্য শপথ নিচ্ছি।” বিজেপির নাম না-তুলেও গত বছর ১৫ মে বিদ্যাসাগর কলেজে বিদ্যাসাগরের মুর্তি ভাঙার ঘটনাও স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, ”ওরা শুধু মুর্তি ভাঙছে না, বাংলার ঐক্য, সংস্কৃতি, অহঙ্কার ভাঙার চেষ্টা করছে। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।” শিক্ষামন্ত্রী কলেজ স্কোয়ার ও বিদ্যাসাগর কলেজেও বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মাল্যদান করেন।