গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
শুভেন্দু অধিকারীর সন্দেশখালি যাওয়া নিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ রাজ্য। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য সরকার।
তবে আবেদনের দ্রুত শুনানির জন্য রাজ্যের আর্জি খারিজ করেছে ডিভিশন বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘আমাদের অনেক কাজ রয়েছে। কে যাচ্ছেন আর কে যাচ্ছেন না, তা দেখার সময় আমাদের নেই। মামলা দায়ের করুন। শুনানির জন্য আসবে।’’ ঘটনাচক্রে, সন্দেশখালিকাণ্ডের অভিযুক্ত শাহজাহান শেখের গ্রেফতারির দিনেই রাজ্যের তরফে এই আবেদন জানানো হল।
বুধবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুকে আবার সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। উচ্চ আদালতের নির্দেশ, জেলিয়াখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের হালদারপাড়ায় যেতে পারবেন শুভেন্দু। তবে এর জন্য স্থানীয় থানায় তাঁকে মুচলেকা দিতে হবে। পাশাপাশি ওই নির্দিষ্ট এলাকায় ১৪৪ ধারা জারির উপরেও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের একক বেঞ্চ।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি শুভেন্দুকে সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। ওই দিনই তিনি সন্দেশখালি গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার সময় বিরোধী দলনেতা জানিয়েছিলেন, আবার সন্দেশখালি যাবেন তিনি। কিন্তু তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দেয় রাজ্য। ফলত, সন্দেশখালির হালদারপাড়ায় যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আবার হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু। বুধবার সেই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি চন্দের বেঞ্চে। বিচারপতি চন্দের সেই নির্দেশকেই ডিভিশন বেঞ্চে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে রাজ্য।
বুধবার আদালতে রাজ্যের সওয়াল ছিল, শুভেন্দু যে দিন সন্দেশখালি গিয়েছিলেন, সে দিন বেশ কয়েকটি জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি ছিল। কিন্তু তা লঙ্ঘন করেন বিরোধী দলনেতা। অনেক লোকের জমায়েত হয়েছিল। তাঁর সঙ্গে বিজেপির স্থানীয় নেতারাও ছিলেন। আদালতে ‘খলিস্তানি বিতর্ক’ নিয়েও শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে রাজ্য। রাজ্যের আইনজীবী বলেন, ‘‘এক জন দায়িত্বশীল ব্যক্তির জানা উচিত যে, কী করা উচিত এবং কখন করা উচিত। পুলিশের উদ্দেশে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু। তিনি এক জন আইপিএস অফিসারকে ‘খলিস্তানি’ বলেছেন। আমরা এফআইআর করতে চেয়ে মামলা করছি। ইতিমধ্যেই বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’’ আদালত শুভেন্দুকে যে রক্ষাকবচ দিয়েছে তিনি তার অপব্যবহার করছেন বলেও আদালতে সওয়াল করেন রাজ্যের আইনজীবী। এর পর পাল্টা ‘খলিস্তানি’ বিতর্কে রাজ্যের বক্তব্যের বিরোধিতা করেন শুভেন্দুর আইনজীবী।